আমরা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাস করিনা বরং সংবিধান অনুযায়ী আমরা প্রত্যেকেই গর্বিত বাংলাদেশী নাগরিক; তাই জাতীয় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সুশাসন ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, এ দেশের সকল নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবে এবং সকল ধর্মের মানুষ আওয়াজ তুলে বলবে আমরা এখানে সংখ্যাগুরুও নই, কেউ সংখ্যালঘুও নই, আমরা সকলেই সমান। আমরা চাই এখানে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু কথার কবর রচনা হোক। তিনি বলেন, জামায়াত জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্নত ও মানবিক সেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আপনারা যে কোন সমস্যার কথা আমাদেরকে নিঃসংকোচে বলবেন। আপনারা আপনাদের সমস্যার কথা না বলতে পারলে আমরা ধরে নেবো আপনারা আমাদেরকে আপন মনে করতে পারছেন না। চিকিৎসাসহ যে কোন মানবিক সেবা দিতে আমরা সব সময়ই আন্তরিক। ‎তিনি আগামী নির্বাচনে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন এই স্লোগানকে সামনে রেখে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার আহবান জানান। রোববার (১১ মে) দিবাগত রাতে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানাধীন ঋষিপাড়া সার্বজনীন মন্দির কমিটির সদস্য ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহবান জানান।

মন্দির কমিটির সভাপতি তারক দাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রমেন্দ্র কুমার দাশের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মু. আজিজুল ইসলাম ফারাজী, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, জামায়াত নেতা ইবাদত হোসেন, রেজাউল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মু.আমিনুল ইসলাম, পিন্টু মোল্লা, ফিরোজ গাজী, মিজানুর রহমান, আবু তাহাসিন, ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদ, ইমাম মাহাদী, নুর ইসলাম, আব্দুস সবুর, হাসিবুর রহমান, ইয়াসিন, গোলাম মোস্তফা, আতিয়ার রহমান, শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম মন্দিও কমিটির কোষাধ্যক্ষ বিপ্লব দাস, মন্দির কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য নিতাই দাশ, কালিপদ দাশ, গজাল দাশ, মন্দির কমিটির সদস্য বলোরাম দাশ, সুজন দাশ, বিপ্লব দাশ, বিপুল দাশ, পলাশ দাশ, অশীত দাশ, সৌরভ দাশ, সাগর দাশ, প্রলয় দাশ, সুজিত দাশ, দেবাশীষ দাশ, অশোক দাশ, উত্তম দাশ, চপল দাশ, দয়াল দাশ, চন্দন দাশ, হৃদয় দাশ, আকাশ দাশ, সুজিত দাশ, উত্তম দাশ, জয়দেব, কৃষ্ণ সরকার, নিরোধ মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ। আমাদের দ্বিতীয় পরিচয়, এদেশে আমাদের যাদের জন্ম হয়েছে আমরা সবাই বাংলাদেশী। একজন বাংলাদেশী নাগরিককে আমার দেশের সংবিধান যে অধিকার দিয়েছে সকল ধর্মের নাগরিক সমানভাবে তা ভোগ করবে। আমরা তার কমবেশি দেখতে চাই না। তিনি বলেন, মেধা যোগ্যতার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশের দায়িত্ব পালন করবে এদেশের তরুণ সমাজ। এখানেও আমরা কোনো ব্যবধান বরদাশত করবো না। তিনি বলেন, আমি সকল সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অনুরোধ করবো, আসুন আমরা পরস্পরকে ভাই এবং বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি। তাহলে হিংসা এবং হানাহানি থাকবে না। কোনো ধর্ম কাউকে দুর্বৃত্ত হতে শেখায় না। হিংসা-প্রতিহিংসা শেখায় না। আমি তা বিশ্বাস করি না। এ রকম যদি কিছু হয় তাহলে সেটা ধর্মই না। ধর্ম মানুষকে পরিশীলিত করে। ধর্ম মানুষকে মানুষ বানায়। পাশবিক চরিত্র যাদের আছে তাদেরকেও মনুষত্বের দিকে নিয়ে আসে। মহানগরী আমীর আরও বলেন, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় শত্রুদের চিহ্নিত করে সম্মিলিতভাবে তাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে। আগস্ট-বিপ্লবের চেতনাই ছিল সকল ক্ষেত্রে ন্যায়, ইনসাফ ও জাস্টিস প্রতিষ্ঠা। তাই এই চেতনা থেকে আমাদের পিছপা হওয়ার কোন সুযোগ নেই।