সকল অংশীজনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্প প্রস্তুত করে পিআর পদ্ধতিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে মোহাম্মদপুর থানা জামায়াত আয়োজিত জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫-দফা দাবি আদায়ে লিফলেট বিতরণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন শেরেবাংলা উত্তর থানা আমীর আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আদাবর থানা আমীর আল আমিন সবুজ, মোহাম্মদপুর পূর্ব থানা আমীর মশিউর রহমান ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ মাসুম প্রমূখ।

ড. রেজাউল করিম বলেন, বিগত ১৬ বছর জনগণ কোন ভোট দিতে পারেনি। তাই আসন্ন নির্বাচনে সবার আগে জনগণের ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। একই সাথে কালো টাকা ও পেশিশক্তিমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। শুধুমাত্র কথামালার ফুলঝুড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না বরং নির্বাচন যাতে উৎসবমূখর হতে পারে সে জন্য সরকারকে নিতে হবে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ। তিনি স্বৈরাচার পরবর্তী দেশের অবস্থা উল্লেখ করে বলেন, ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবে ফ্যাসিবাদীরা দেশ ছেড়ে পালালেও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা তাদের দোসরদের কারণেই দেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। চিহ্নিত একটি মহল একাজে ইন্ধন যোগাচ্ছে। ফলে থানা ঘেরাও করে আসামী ছিনতাইয়ের মত দুঃখজনক ঘটনাও ঘটছে। তাই এসব বিষয়ে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় জুলাই বিপ্লব ফল পুরোপুরি ঘরে তোলা যাবে না।

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন আশাবাদের সৃষ্টি হলেও সরকারের উপর্যপরি ব্যর্থতার কারণে সাফল্য নিয়ে নানাবিধ সন্দেহ-সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। পতিত ফ্যাসীবাদীরা নতুন করে মাথাচাঁড়া দিতে শুরু করেছে। দেশে চাঁদাবাজী সহ অপরাধ প্রবণতা বন্ধ হয়নি বরং চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্য রাজপথে পাথর মেরে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। বিপ্লবোত্তর এ পর্যন্ত প্রায় পৌণে ২শ মানুষকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে পতিতরা ঝটিকা মিছিল করছে। তাই পতিত আওয়ামী লীগের ওপর শুধুই নিষেধাজ্ঞা নয়, বরং তাদের দোসর জাতীয় পার্টির সহ অন্যান্য সহযোগীদের নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা যাবে না এবং দেশে শান্তিও প্রতিষ্ঠিত হবে না।

মহানগরী সেক্রেটারি বলেন, পতিত স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শক্তি রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। বিগত প্রায় ১৬ বছরে দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন ও তামাশা করা হয়েছে। তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর সংস্কার, মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীদের বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং সে সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আর সে দাবি আদায়ের জন্য আমরা আজ গণসংযোগ করছি। এ লক্ষ্যে আমরা সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচিও পালন করবো। তিনি দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারকে গণদাবি মেনে নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।