সাঁথিয়া (পাবনা) সংবাদদাতা: জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ঢাবিতে যারাই ক্ষমতায় এসেছে শিবিরের উপর সীমাহীন জুলুম নির্যাতন করেছে। শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে। হলের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন সেই নির্যাতনের শিকার হওয়া শিবিরই সবার নিরাপদ ঠিকানা। ডাকসু ও জাকসুর হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ জামায়াতে ইসলামীকে এভাবে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাবেন। গতকাল শনিবার বিকেলে সাঁথিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা উলামা বিভাগ আয়োজিত উলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, হাসিনা সরকার দেশকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে তাঁবেদারি রাষ্ট্র করার চেষ্টা করছিল। ইসলামকে নির্মূল করার সব আয়োজন সম্পূর্ণ করেছিল। এরই নমুনা হিসেবে মাওলানা নিজামীকে হত্যা করেছে, আব্দুস সোবহানকে নিষ্ঠুরভাবে জেল খানায় হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়েছিল ফ্যাসিস্ট পতনের আন্দোলন। যে জনগণ ফ্যাসিবাদী সরকারকে বিদায় করেছে। নতুন করে কোন ফ্যাসিবাদকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না। ঢাবি ও জাবি থেকেই ইসলাম বিজয়ের সূচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহা ছিলেন সব নাটের গুরু, পরে শেখ হাসিনার দৌড়ানি খেয়ে পালিয়েছেন। জামায়াত শিবিরের সাথে যারাই দূর্ব্যবহার করেছে তারাই পালিয়েছে। অবৈধ বিচারের সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এরা খুনি এদের কোন ক্ষমা নেই। হাসিনা নিজে পালিয়ে কুল পাননি। নেতাকর্মী এতিম হয়ে গেছে।
বিএনপির দূর্নীতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দল ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতিতে ৫ বারের চাম্পিয়ন হয়েছিল। যার নতুন করে নমুনা ৫ আগষ্টের পর দেখিয়েছে। দেশের মালিক মনে করে বালু খাওয়া, পাথর খাওয়া, চাঁদাবাজী, দখলদারিত্ব সহ সকল অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এরই প্রতিদান এখন পাচ্ছে। আগামীতে চাঁদাবাজ, দখলদার ও সন্ত্রাসী মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই।
সাঁথিয়া উপজেলা ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা আবু হানিফের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যরিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুর রহিম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ও জেলা উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল গাফফার খান, সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মোখলেছুর রহমান।
জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সবাই সমান অধিকার পাবে
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সবাই সমান অধিকার পাবে। একটি বৈষম্যহীন রাস্ট্র গঠন করবে। নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। ছাত্র - ছাত্রীদের জন্য আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ দেশেরই নাগরিক। বিগত দিনে একটা পক্ষ তাদেরকে সংখ্যালঘু বলে নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। জামায়াতে ইসলামী সবসময় সনাতনী ধর্মের লোকদের পাশে ছিল। কোন অপশক্তি যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেতে না পারে এজন্য ৫ আগস্ট পরবর্তী তাদের ঘর- বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পাহারা দিয়েছে জামায়াত।
গতকাল শনিবার সকালে পৌর শহরে এক কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী উল্লাপাড়া উপজেলা শাখা আয়োজিত ওয়ার্ড দায়িত্বশীল সমাবেশে এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জামায়াত প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। যতোদিন ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত না হবে ততোদিন এ লড়াই চালিয়ে যাবে জামায়াতে ইসলামী।
জামায়াত দুনিয়ার কোন শক্তিকে পরোয়া করে না। একমাত্র আল্লাহ তায়ালার দেয়া বিধান অনুসারে জীবন পরিচালনা করে। জামায়াতকে জুজুর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা কর্মীরা হাসিমুখে ফাঁসির কাষ্ঠে গিয়েছে কিন্তু বাতিলের কাছে মাথানত করেনি।
তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে কোন দুর্বৃত্তকে ভোট কেন্দ্র দখল করতে দেয়া হবে না। সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করতে হবে। লেবেলপ্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। যাদের উদ্দেশ্য ভোট ডাকাতি করা তাঁরাই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। যেনতেন আওয়ামী স্টাইলের নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। জণগণ এখন সচেতন তাদেরকে আর বোকা বানানো যাবে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে এদেশের জণগণ। সুতরাং জনগণের আকাক্সক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
জুলাই বিপ্লবে যারা জীবন দিয়েছে তাদের পরিবারের অন্তত একজনকে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। সকল গণহত্যার বিচার করতে হবে। পাচার কৃত অর্থ ফেরত আনতে হবে। প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহজাহান আলির সভাপতিত্বে ও উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, সলঙ্গা থানা জামায়াতের আমীর রাশেদুল ইসলাম শহিদ, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল বারী প্রমুখ।