ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সাতটি দেশকে ‘নিরাপদ’ ঘোষণা করেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রকাশিত এই তালিকায় বাংলাদেশের নামও রয়েছে। এই তালিকায় থাকা দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য ইইউতে আশ্রয় পাওয়া আরও কঠিন হবে।
ইইউ বলছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে এসব দেশের নাগরিকদের আশ্রয় আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করা যাবে। পাশাপাশি তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া জোরদার করা যাবে।
বাংলাদেশ ছাড়াও তালিকায় রয়েছে— কসোভো, কলম্বিয়া, মিসর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিসিয়া।
তবে, তালিকাটি এখনও চূড়ান্ত নয়। এটি কার্যকর হওয়ার আগে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অনুমোদন লাগবে। অনুমোদন পেলে এটি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য একটি বড় পরিবর্তন হয়ে দাঁড়াবে।
ইইউর অভিবাসন কমিশনার ম্যাগনার ব্রুনার জানান, ‘অনেক সদস্যদেশ আশ্রয়ের আবেদন প্রক্রিয়ায় জটিলতায় পড়ছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াকে আমরা এগিয়ে নিতে চাই।’
কমিশনের মতে, ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত দেশের নাগরিকরা সাধারণভাবে নির্যাতনের শিকার হন না বা সংঘাতপূর্ণ পরিবেশে থাকেন না। তাই এসব দেশের আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন অধিকাংশ সময়েই অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ফলে এসব আবেদনের প্রাথমিক যাচাই দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তারা বলছে, এটি অনেক প্রকৃত শরণার্থীকে সুরক্ষা পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে পারে।
ইউরোপের রাজনীতিতে অভিবাসন ইস্যু নিয়ে জনমত বেশ বিভক্ত। অনেক দেশে উগ্র ডানপন্থী দলগুলো অভিবাসন বিরোধী অবস্থান নিয়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ফলে ইইউ অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর হওয়ার চাপ অনুভব করছে।
কমিশন জানিয়েছে, ইইউর সদস্যপ্রার্থী দেশগুলোকেও ভবিষ্যতে ‘নিরাপদ দেশের’ শর্ত পূরণ করতে হবে। তবে যদি কোনো দেশে যুদ্ধ বা সহিংসতা চলে, সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম করা হতে পারে। যেমন ইউক্রেনের ক্ষেত্রে হয়েছে।
এর আগে, ২০১৫ সালে ইইউ একই ধরনের একটি তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তুরস্ককে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হলে সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।
বর্তমানে যেসব দেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী ইইউতে প্রবেশ করছেন, সেসব দেশের ভিত্তিতেই এই নতুন তালিকা করা হয়েছে। কমিশন বলছে, সময়ের সঙ্গে তালিকাটি হালনাগাদ করা হবে।
তালিকার বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, ইইউ’র সদস্যরাষ্ট্ররা চাইলে নতুন দেশ যুক্ত করতে পারবে, তবে তালিকা থেকে কোনো দেশ বাদ দিতে পারবে না। সূত্র: এএফপি