দুই বছর পর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারো ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। মূলত তিনটি আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থার অর্থায়নের কারণে এই অগ্রগতি হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের জুনে দেশের রিজার্ভ এই মাত্রায় ছিল।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ১৩৪ কোটি ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৯০ কোটি ডলার এবং জাপানের জাইকা থেকে ঋণ সহায়তার অর্থ যুক্ত হওয়ার ফলে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বৈদেশিক মুদ্রার মোট সঞ্চিত পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব পদ্ধতির ভিত্তিতে প্রকৃত রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি রয়েছে, যা সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে সক্ষম। সাধারণত একটি দেশের কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত সময়ে প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি বন্ধ রাখার কারণে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে। গত দশ মাসে বাজেট সহায়তা ও ঋণ আকারে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা দেশে এসেছে।

বাংলাদেশের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি, আমদানি ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি ও বাণিজ্য ঘাটতির কারণে পরবর্তী সময়ে রিজার্ভে চাপ পড়তে শুরু করে।

তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০২২ সালের জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়ে সাহায্য নিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।