উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বেড়েছে কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের চাষ। গত কয়েক বছরে ভালো ফলনের আশায় এবার বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজ বীজ চাষে ঝুঁকেছেন জেলার চাষীরা। প্রতি বিঘা জমিতে মাত্র এক লাখ টাকা খরচে তিন থেকে চার লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তারা। এতে জেলায় এবার ৫ কোটি টাকার পেঁয়াজ বীজ বিক্রি সম্ভব বলছে কৃষি বিভাগ।
বিভিন্ন এলাকার মত সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের বুড়িরবান, মালাদাম, যতনপুকুরি এলাকার কৃষকরাও চাষ করেছেন পেঁয়াজের বীজ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি জমির বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে এ আবাদটি। দেখে মনে হয় শুভ্র সাদা ফুলের গালিচা। কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজের বীজের এ আবাদ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় বীজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। এ বছর মৌমাছির আনাগোনা কম থাকায় ভালো ফলনের আশায় হাত দিয়েই গাছের পরাগায়ন ঘটাচ্ছে তারা। জানা গেছে, কৃষি সমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়ে গত বছর কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের চাষ লাভজনক হওয়ায় এবার বাণিজ্যকভাবে এর চাষ শুরু করেছেন নতুন উদ্যোক্তাসহ চাষীরা। চলতি মৌসুমে আশানুরূপ ফলন আসলেও পয়াপ্ত মৌমাছি না থাকায় কিছুটা ভোগান্তি বেড়েছে। ফলে ভালো পেঁয়াজ বীজের আশায় জেলার প্রতিটি পেঁয়াজ বীজ বাগানে হাত দিয়েই চলছে পরাগায়নের কাজ। চাষীদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছে গ্রামের নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা। এতে করে সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এ বছর ৬ একর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন কৃষক সংকর রায় মানিক। আশানুরূপ ফলন হওয়ায় তিনি উৎপাদন ব্যয়ের তিন থেকে চার গুণ আয়ের স্বপ্ন দেখছেন। একই স্বপ্ন আশেপাশের অন্য পেঁয়াজ বীজ চাষীদেরও। কৃষক সংকর রায় মানিক জানান, এক সময় আলুসহ অন্যান্য আবাদ করলেও বর্তমানে পেঁয়াজ বীজ আবাদ লাভজনক ও সময়োপযোগী হওয়ায় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা। সংকর রায় বলেন, ৬ একর জমিতে বীজ হারভেস্ট পর্যন্ত প্রায় ২০-২২ লাখ টাকা খরচ হবে। একরে ৭০০-৮০০ কেজি বীজ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আশানুরূপ ফলন হলে ৬০ লাখ টাকার অধিক বিক্রি সম্ভব। পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মতিন জানান, জেলায় এবার ২২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হলে এ সব জমি থেকে এবার ৫ কোটি টাকার পেঁয়াজ বীজ বিক্রি সম্ভব।