বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ভেতরে চলমান প্রশাসনিক বিভাজন, পদোন্নতি নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং বিজ্ঞানীদের মধ্যে অসন্তোষের অবসান ঘটাতে অবশেষে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. মো. খালেকুজ্জামান। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও তাঁর দূরদর্শী পদক্ষেপের ফলে প্রতিষ্ঠানে ধীরে ধীরে ফিরছে স্থিতিশীলতা। ডিজির ন্যায়নিষ্ঠ নেতৃত্বে আপাতত বইছে স্বস্তির হাওয়া।
দীর্ঘদিন ধরে প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার (পিএসও) পদে পদোন্নতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ বিজ্ঞানীদের মধ্যে অস্থিরতা চলছিল। অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক প্রভাব ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রমোশন তালিকা তৈরি করা হচ্ছিল, যার ফলে ইনস্টিটিউটের গবেষণার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ২টা ৩০ মিনিটে ব্রি মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় নিয়োগ ও পদোন্নতি কমিটি–১ (ডিপিসি)-এর সভা। সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পদোন্নতি প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রেখে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । ভবিষ্যতে কোনো প্রমোশন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ক্লিয়ারেন্স ছাড়া দেওয়া যাবে না। একইসঙ্গে দলীয় আনুগত্য, প্রশাসনিক প্রভাব বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয় গবেষণায় অবদান, কর্মদক্ষতা, সততা ও শৃঙ্খলাবোধ হবে প্রমোশনের মূল মানদণ্ড। সম্প্রতি পদোন্নতি ঘিরে যেসব বদলি করা হয়েছিল, সেগুলোও বাতিল করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. খালেকুজ্জামান বলেন, ধান গবেষণার মতো একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে কোনো দলীয় বা ব্যক্তিগত প্রভাবের বাইরে রাখাই এখন সবচেয়ে জরুরি। আমি কাউকে জোর করে পদোন্নতি দিতে চাই না। পদোন্নতি হবে যোগ্যতা, কাজের মান এবং শৃঙ্খলার ভিত্তিতে। সবাইকে বলব, পত্রিকায় লেখালেখি না করে সরাসরি আমার কাছে আসুন আমি ন্যায়সঙ্গতভাবে শুনব এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেব। তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলতে চাই, যেখানে গবেষণা ও দক্ষতা হবে অগ্রাধিকার। দল-মত নির্বিশেষে সবাই যেন সম্মান ও নিরাপত্তার মধ্যে কাজ করতে পারে, সেটাই আমার লক্ষ্য। আমি চাই, ব্রি হোক একটি ‘মডেল ইনস্টিটিউট যেখানে রাজনীতি নয়, গবেষণাই হবে মূল চালিকাশক্তি।