“কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ”-এই কথাটিই যেন আবার সত্য প্রমাণ করলেন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার পরিশ্রমী কৃষকরা। চলতি মওসুমে উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে লেগেছে হাসি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সবুজে মোড়া মাঠের পর মাঠ যেখানে চোখ রাখি সেখানেই ধানগাছের ঢেউ। কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসি আর মনে আশার আলো।
খর্ণিয়া ইউনিয়নের কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, বর্ষা মওসুমে ধান চাষে সেচ কম লাগে, তবে পোকামাকড়ের আক্রমণ কিছুটা বেশি হয়। কীটনাশক ও সারের দাম বেড়েছে, তবু ফলন ভালো হওয়ায় এবার ধান চাষে লাভবান হব বলে আশা করছি।”
শোভনা ইউনিয়নের কৃষক মো. আবুল কালাম বলেন, “আমি ব্রি ধান ৭৫ জাতের ধান লাগিয়েছি। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাব বলে আশা করছি।”
রুদাঘরা ইউনিয়নের কৃষক কায়সার আলী জানান, “আমি এবার নতুন ব্রি ধান ১০৩ চাষ করেছি। সব ঠিক থাকলে বিঘা প্রতি ২৮ থেকে ৩২ মণ পর্যন্ত ফলন হবে বলে আশা করছি। তবে সার ও শ্রমিকের দাম অনেক বেড়েছে। এখন ধান কাটতে একজন শ্রমিককে ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে, তবুও শ্রমিক পাওয়া কঠিন।
ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি ব্রি ধান ৪৯ জাতের ধান চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ২৮-৩০ মণ ধান উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছি।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, চলতি মওসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ৯৩৯ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি ধান ৪৯, ৭৫, ৮৭, বিনা ধান ১৭ এবং নতুন ব্রি ধান ১০৩ সহ বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফলন আশানুরূপ হওয়ায় কৃষকরা সন্তুষ্ট।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ বছর অনুকূল আবহাওয়া ও কীটপতঙ্গের তেমন কোনো আক্রমণ না থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চাষ হয়েছে এবং ফলনও বেড়েছে। বাম্পার ফলনে কৃষকরা অত্যন্ত খুশি। আবহাওয়া ও বাজারদর অনুকূলে থাকলে তারা প্রত্যাশিত লাভবান হবেন।