মো. মনির হোসেন, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের মাগুর জোড়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদুল হক মানিক নিরলস পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে অর্গানিক সবজি উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে তিনি এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় যুবক ও কৃষকরা উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন। তার সফলতার গন্ডি এখন এলাকা ছাড়িয়ে অন্য ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এই ইউপি চেয়ারম্যান এখন কৃষিকাজকে জীবনের পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং সাফল্য পেয়েছেন।

সরেজমিন দেখাযায়, এমদাদুল হক মানিক আপাদ মস্তক এক কৃষক। একজন শিক্ষিত,ন¤্র ও ভদ্র স্বভাবের কারণে তিনি অল্প বয়সে চেয়ারম্যান হিসিবে নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ও তিনি কৃষিকাজ চালিয়ে গেছেন এবং আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার চেষ্টা করেছেন। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর সবটুকু সময় কৃষি কাজ করে পার করছেন। তিনি প্রায় ৬শ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। আধুনিক পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও কীটনাশকমুক্ত কৃষি পণ্য উৎপাদন শুরু করেন। বর্তমানে তার মাছের খামার,সবজি ক্ষেত,পোল্ট্রি ফার্ম ও ধানক্ষেত রয়েছে।

এমদাদুল হক মানিক ১৯৯১ সালে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৬ সালে ¯œাতক ডিগ্রি পাশ করনে। এলাকাবাসীর অনুরোধে ১৯৯৭ সালে তিনি ইউপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন এবং বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি জনসেবা শুরু করেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর তিনি উপলব্ধি করেন কৃষিতে বিষ ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মানুষের শরীরে নানা রকমের রোগ ব্যধি তৈরী হয়। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর তিনি নিজের পরিবারের খাওয়ার জন্য অর্গানিক পদ্ধতিতে কৃষি পণ্য উৎপাদন,মাছ চাষ ও মুরগীর ফার্ম করেন। এগুলোতে তিনি খাবার হিসেবে দেশীয় বিষমুক্ত খাবার দেন। সফলতা চলে আসে তার কৃষি উৎপাদনে। নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তিনি এগুলো আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে বিলি করেন। পরে এক সময় তিনি বাণিজ্যিকভাবে পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি শুরু করে সফলতা পান। এরপর কৃষি প্রযুক্তি, জৈব সার ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে উৎপাদন বাড়িয়েছেন। তার খামারে ধান, সবজি, ফলমূলসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। প্রথমে কৃষিকাজে নানা বাধার সম্মুখীন হলেও নিজের অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের ফলে তিনি সফলতা পান। তার উৎপাদিত কৃষিপণ্য স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমদাদুল হক মানিক প্রমাণ করেছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রম থাকলে কৃষি খাতেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। তার সাফল্যের গল্প নতুন প্রজন্মের কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

এমদাদুল হক মানিক জানান,সফলতার দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। আমার সফলতার পেছনে পরিবারের ব্যাপক সমর্থন ও সহযোগিতা রয়েছে। আমি এখন বছরে লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করি। এক বছর ধরে বাণিজ্যিক উৎপাদন করছি। আমার এসব অর্গানিক সবজি ও ফসল উৎপাদন দেখে অনেকে উৎসাহিত হয়েছেন। আমি চাই মানুষ বিষ ও কীটনাশকমুক ফসল উৎপাদন করুক এবং রোগমুক্ত থাকুক।