তরমুজ মূলত গ্রীষ্মের ফল হলেও সুস্বাদু এই ফলটি বর্ষাকালেও খুলনায় ব্যাপকভাবে আবাদ হচ্ছে। খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা ও দিঘলিয়া উপজেলায় চাষ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। মৎস্য ঘেরে মাচা তৈরি করে চাষ করা হচ্ছে রসালো এ ফলটি। অফসিজনে তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।

খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নের মাচায় চাষ করা এমন একাধিক ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে কৃষকেরা সফলভাবে অফসিজন তরমুজ উৎপাদন করছেন। অফসিজনে অন্য ফসলের সাথে তরমুজ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন তারা। তাদের দেখে শুধু সিজনে তরমুজ চাষ করা কৃষকরাও নেমে পড়েছেন চাষে। ফলে অফসিজনেও তরমুজ চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। অসময়ে তরমুজ চাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের বিশেষ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় বলে জানান তারা।। উন্নত জাতের পাশাপাশি আবহাওয়া অনুক’ল বীজ বাছাই করা, পলিথিন বা নেটে তরমুজ ঝুলিয়ে দেয়া, পোকা দমনে বালাই নাশক স্প্রে করা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) জেলায় ৯৬৬ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুলনার মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়া অফসিজন তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। এক বিঘা জমিতে গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচে ১ লাখ টাকারও বেশি তরমুজ বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে কৃষকেরা এখন লাভজনক বিকল্প ফসল হিসেবে তরমুজের দিকে ঝুঁকছেন। ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, সিজনের থেকে অফসিজনে তরমুজের স্বাদ বেশি। এজন্য বিক্রি কওে দামও বেশি পাওয়া যায়। ঘেরের পাড়ে তরমুজ লাগানোর ফলে পানি সেচেও বেশি কষ্ট করতে হয় না। বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নের তরমুজ চাষী বিল্লাল হোসেন জানান, আগে শুধু মওসুমে তরমুজ চাষ হতো। বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, উপজেলায় বিসিআরএল প্রকল্পের মাধ্যমে ৭ টি স্কুল কার্যক্রম চলমান। প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বীজ সরবরাহ, জৈব বালাইনাশক হিসেবে সেক্স ফেরমন ফাঁদ প্রদান করা হচ্ছে। বিসিআরএল প্রকল্পে ২৮০ জন কৃষকের প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে।