শফিকুল ইসলাম, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় আধুনিক যন্ত্রের প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে লাঙ্গল দিয়ে হালচাষ।

কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে সেই মানব সভ্যতার সোনালী অতীত-ঐতিহ্য। ঠিক তেমনি দেশের বরেন্দ্র জনপদের সবজির ভান্ডার হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের সেই লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ এখন শুধুই স্মৃতি। দুই দশক আগেও দেখা যেত সেই কাক ডাকা ভোরে কৃষকরা গরু ও কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে যেতেন মাঠের জমিতে হালচাষ করার জন্য।

বর্তমানে আধুনিকতার প্রভাবে ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়াও লেগেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি জমিতে। তাই আর সকালে কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে কষ্ট করে মাঠে যেতে দেখা যায় না কৃষকদের। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষক-কৃষাণীর সেই লাঙল জোয়াল।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাল চাষের নতুন দিগন্তের সৃষ্টি হওয়া লাঙল-জোয়ালের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করা হয়।

এক সময় জেলার প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু, মহিষ পালন করত হাল চাষ করার জন্য। আবার অনেকে গবাদিপশু দিয়ে হাল চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। আবার অনেকে, ধান, গম, ভুট্টা, তিল, সরিষা, কলাই, আলু প্রভৃতি চাষের জন্য ব্যবহার করতেন।

নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে হাল চাষ করে তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করতেন। হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেতেন তাদের পরিবারের সচ্ছলতা। আগে দেখা যেত ফজর নামাজের পর বা তার পূর্বে কৃষক গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল নিয়ে মাঠে বেড়িয়ে পড়তেন। এখন আর চোখে পড়ে না সেই দৃশ্য। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চালাচ্ছে জমি চাষাবাদ। ফলে অনেক কৃষক এখন পেশা বদল করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন বলে বেশ কয়েকজন কৃষক জানান।