বাগমারা (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাগমারায় এই মৌসুমে আউস ধানচাষ হলেও কালের বিবর্তনে আউসের ধান বাদ দিয়ে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানচাষে আগ্রহ বাড়িয়েছে। আগে আষাঢ় মাষে আউস মৌসুমের ধান পারিজাত, ইরি, খাজুরবাদাসহ বিভিন্ন জাতের ধানচাষ করছিল কৃষকরা। এ সব ধান শুকনা জমিতে চাষদিয়েই রোপন হতো। এতে চাষে খরচ কম হলেও শ্রমিক কম লাগতো। বর্তমানে আধুনিকের ছোঁয়ায় সেই সব ধান বাদ গিয়ে শ্রাবণ মাসে কাঁদা করে উন্নত জাতের ধানচাষ হয়। আগের ধান বিঘাই ৬/৭ মন হতো সেই জমিতে ফলনশীল জাতের ধান বিঘাতে উৎপাদন ২০/২২ মন হারে হয়। আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহ হতে শ্রাবনের মাঝামাঝি এলাকায় রোপা-আমন ধানচাষ হয়ে থাকে। এলাকায় রোপা-আমন জাতের ৭৫, ৮৯, ২১ ও আইব্রিড জাতের ধানচাষে ব্যস্ত সময় পার করেছন কৃষকরা। এই এলাকার শত শত কৃষকরা এখন চাষাবাদ ও চারা রোপণের কাজে উঠেপড়ে লেগেছেন। গত বছরের ইরি- বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ শুরু করেছেন বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্য মতে, এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৭শত ৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হলেও প্রকৃত চাষাবাদের পরিমান ৪ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

শ্রাবণের শুরুতে কয়েকদফা বৃষ্টিপাতের কারণে অপেক্ষাকৃত উচু জমি সেখানে ভরা বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম এমন জমিতে রীতিমত রোপা আমন চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত বছর ইরি বোরোর বাম্পার ফলন হলেও শেষ পর্যায়ে ধান কাটাই মাড়াই নিয়ে নিয়ে কৃষক বিড়ম্বনায় পড়ে। ওই সময় টানা বৃষ্টিপাতের কারণে অনেকের কাচা পাকা ধান তলিয়ে যায়। পরে ওই সমস্ত ধান কৃষক ঘরে তুলে আনলেও মান ঠিক না থাকায় কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। এবার কৃষকরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাড়তি জমিতে রোপা আমন চাষাবাদ শুরু করেছেন। বালানগর গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, এ বছর আলু চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তারপর ইরি বোরো চাষ করে বাম্পার ফলন হলেও ধান কাটাই মাড়াইয়ের সময় বৃষ্টিতে ভিজে ধানের মান নষ্ট হয়ে যায়। এতে ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে তিনি বঞ্চিত হন তিনি। তার মতে আলু ও ইরি ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি এবার বাড়তি জমিতে রোপা আমন চাষ শুরে করেছেন। ৩ বিঘা জমিতে চাষ দিয়ে চাষা রোপন শেষ করেছেন। মোহম্মাদপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক জানান, শ্রাবণের শুরুতে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষক ব্যাপক উদ্যোমে ও এক বুক আশা নিয়ে ধান চাষে নেমে পড়েছেন। তিনিও এবার ২ বিঘাতে চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত করেছেন। তিনি এবার ব্রি ৭৫ জাতের ধান রোপন করবেন প্রত্যাশা করেছেন। এই ধান ব্যাপক খরা হলেও মরতে না এবং হটাৎ বন্যায় তলিয়ে গেলে দুই সপ্তাহ পানির নীচে তলিয়ে থাকলেও ধান গাছ পচার সম্ভাবনা কম। তার মতে এখানকার অধিকাংশ কৃষক উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে আগ্রহী। ব্রি-৭৫ ছাড়াও অনেকে ব্রি- ৮১ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানচাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, আলু ও ইরি বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা রোপা আমন চাষে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা চলমান রয়েছে।

কুমিল্লায় এনডিএফের জুলাই বিপ্লব স্মরণে স্মারক অনুষ্ঠিত

কুমিল্লা অফিস : ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক বিশেষ স্মারক অনুষ্ঠান। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এই ‘জুলাই বিপ্লব আলোচনা সভা’ আয়োজন করে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম, কুমিল্লা শাখা।

ফোরামের সভাপতি ডা. জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। আলোচনা হয় শহীদদের আত্মত্যাগ ও ন্যায়বিচারের আন্দোলনে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে।

প্রদর্শিত হয় জুলাই বিপ্লব বিষয়ক একটি প্রামাণ্যচিত্র। শেষপর্বে ইসলামী সংগীত পরিবেশনায় আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে কুমিল্লায় জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা ও তাঁদের পরিবারকে সম্মান জানান চিকিৎসক সমাজ। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারী মু.মাহবুবর রহমান,সহকারী সেক্রেটারী মু.কামারুজ্জামান সোহেল।

ডা.মজিবুর রহমান,অধ্যাপক ডা.ফজলুল হক লিটন,ডা.উম্মে কুলসুম মুনমুন,অধ্যাপক ডা মাহবুব ইসলাম মজুমদার প্রমুখ।