DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

কৃষি

হোসেনপুরে ভুট্রার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দেশের জনপদের ধানের রাজ্য হিসেবে খ্যাত কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এবার চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা সংবাদদাতা
Printed Edition
d

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দেশের জনপদের ধানের রাজ্য হিসেবে খ্যাত কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এবার চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশাবাদী কৃষকরা। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন পাবে বলে অভিজ্ঞ মহল ধারণা করছেন।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবারে উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টা চাষে উপজেলার কৃষকরা বেশি ঝুঁকে পড়ছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম অথচ ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। উপজেলার সিদলা জিনারী আড়াইবাড়িয়া, পুমদী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এলাকার যে-সব জমিতে পূর্বে বোরো চাষ করা হত সে সব জমির অনেক গুলোই আমরা এবার ভুট্টা চাষ করছি। বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই উঠেনা। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম দামও তেমন বেশি থাকে। এ জন্য আমরা ভুট্টা চাষে এবার ঝুঁকে পড়েছি।

উপজেলার পুমদীর ইউনিয়নে চর পমদী গ্রামের কৃষক সাংবাদিক মোঃ নজরুল ইসলাম খাইরুল বলেন, আমাদের এলাকা আলু চাষের জন্য দীর্ঘদিন থেকে বিখ্যাত। উপজেলার সিংহভাগ আলু আমাদের এলাকায় উৎপন্ন হয়ে থাকে। মৌসুমের শেষদিকে আলুর দাম বাড়লেও এর মুনাফা কৃষকরা পায়নি। মুনাফা পেয়ে থাকেন মজুদদাররা। তাই এবার ভুট্টা চাষ করছি। আশা করি ফলনও বাম্পার হবে। তবে ন্যায্য দাম পেলে কষ্ট সার্থক হবে।

উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের গাবরগাও গ্রামের কৃষক, মোঃ মাইজুউদ্দিন জানান, এ অঞ্চল ধান চাষের পাশাপাশি ব্যাপক ভুট্রার চাষ হয় ধানের চেয়ে ভুট্টা লাভ বেশি তাই ভুট্রার দিকে দিন দিন ঝুঁকে পড়ছে কৃষকরা।

জিনারী ওয়ার্ডের ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ মুন্নী জনান, এবার গত বছরের তুলনায় এ এলাকায় ভুট্টার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আশা করছি ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা নিয়মিত কৃষকদের পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। উপজেলার সিদলা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এলাকার কৃষকরা যাতে ভুট্টা যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারে এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ভুট্টাকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকি।

জিনারী ইউনিয়নের জিনারী ওয়ার্ড ব্লক উপ-সহকারী দিলশাদ মুন্নী জানান, এ এলাকাটি ধান চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী ফসল ইরি। এ মৌসুমে উচু জমি গুলোতে ভুট্রাচাষ করে থাকেন তবে ধানের ন্যায্য মুল্য না পাওয়ায় চাষীরা ভুট্রার দিকে ঝুঁকে পড়ছেন দিন দিন। এতে খরচ কম ফলন ভালো দাম পান বেশি। তবে আমি কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী পরামর্শ দিয়ে থাকি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম শাজাহান কবির জানান, সকল প্রকার ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পায়। বিশেষ করে বীজ, সার ও তেলের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। এবার ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে এবং বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।