সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জ তিনটি উপজেলায় কৃষকদের মনে সংশয় বিরাজ করছে। মাঠে পাকা ধানের হৃদয়জুড়ানো সুবাস; কিন্তু স্বস্তিতে নেই কৃষকরা। আকাশ কালো হলেই তাদের মধ্যে অজানা এক আতংক ভর করে। ফসল ঘরে তুলতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। কালবৈশাখী, ঘন ঘন বৃষ্টি তাদের মনে শঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছরে ঝড়বৃষ্টিতে অকাল বন্যায় তিনটি উপজেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলার নিম্ন অঞ্চল সব ধান তলিয়ে গিয়েছিল। আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সীমাহীন খাদ্য সংকটে পড়া কৃষকেরা এবার বোরো ইরি চাষ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু এবার ফসলের ক্ষতি হলে তাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। সিরাজগঞ্জর তিনটি উপজেলার নিম্ন অঞ্চল ছাড়াও সিরাজগঞ্জের আরো অন্য উপজেলার কৃষকদের মধ্যেও একাই উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। তাড়াশ উপজেলার দিঘি সগুনার গ্রামের কৃষক আব্দুল ছালাম এই প্রতিনিধিকে বলেন, এবারো বৈশাখের যে গরম পড়েছে তাতে যখন আকাশে কালো মেঘ দেখা যায় তখন মনে হয় এবারেও ধান আমি ঘরে তুলতে পারবো বলে মনে হয় না। গত কয়েক বছরের ক্ষতি পোষাতে এ বছর জেলার তিনটি উপজেলায় হাওড় অঞ্চলের কৃষকেরা উন্নত জাতের ধান আবাদ করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের গাছগুলোও খুব বেড়েছে। এরই মধ্যে ব্রি-২৮ ও সবুল লতাসহ কাটারী ধান পরিপুষ্ট হয়ে পাকতে শুরু করেছে। আবার কোনো কোনো এলাকায় আবার আগাম জাতের ধান কাটা শুরু করছে কৃষকেরা। কিন্তু আধা পাকা অবস্থায় আগেভাগে কাটায় ধানে চিটার পরিমাণ বেশি দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে রযেছে ব্লাস্ট ও নেট রোগ। তাই কৃষকরা আশংকা করছে, এবারও কি তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। সলঙ্গা আমশড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, গত বছর অকাল বন্যায় তলিয়ে যায় আমাদের নিম্ন অঞ্চলের নিচু ইরি বোরো ধান ক্ষেত।

উল্লাপাড়া উপজেলার ১নং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আগরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, গত আমন মৌসুমে খাল পুনঃখনন না করার কারণে দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টির পানি জমে নিচু জমি গুলি বন্যার পরিণত হাওয়ার কারণে আমরা কোনো ক্ষেতে আবাদ করতে পারিনি। আগের কয়েক বছরও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এবাও বোরো চাষ করে অতীতের ক্ষতি কিছুটা পোষাতে চেয়েছি। কিন্তু ধান বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়ায় এখন আশঙ্কার মধ্যে আছি। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কয়েক দফা শিলা বৃষ্টি ও দমকা ঝরু আবহাওয়া এবং বজ্রপাত আমাদের মনে শঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এবার যদি বোরো ধান ঘরে তুলতে না পারি তাহলে রিনদেনা তো পরিশোধ করা দূরের কথা আমাদের পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিসার আব্দুর রউফ এই প্রতিনিধি বলেন, উপজেলায় এ বছর ১৯ হাজার তিন শত পাঁচ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলায় গত বছরে দফায় দফায় অতি বৃষ্টি কারণে বিভিন্ন উপজেলার নিম্ন অঞ্চলের বোরো ও আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছিল। এই জন্য হাওড় বাঁচাও বিল বাঁচাও ও কৃষক বাঁচাও কথাগুলো বলছিলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সলঙ্গা ৩নং ধুবিল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কৃষক ও শ্রমিক দলের সভাপতি নেক ব্লাস্ট রোগ ও কোল্ড ইনজুরির কারণে ধানে চেটা দেখা দিতে পারে রাতের তাপমাত্রা কম থাকলে কোল্ড ইনজুরি দেখা দেয় আর এমনতিইে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ধানে চিটা থাকে। আমরা আশাবাদী যে এবার উপজেলায় বোরো আবাদ খুব ভালো হয়েছে।