বাগমারা (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাগমারায় মওসুমের বোরো ধান কাটা-মাড়ায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন বোরো ধানের হিল্লোল। চাষের শুরুতে প্রচণ্ড খরার কবলে পড়লেও পরবর্তীতে অনুকূল আবহওয়ায় বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে গেছে। তবে উপজেলায় ধানের উৎপাদন বাড়লেও কৃষককের মুখে হাসি নেই। সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধিতে ধানচাষে লাভ মিলছে না বলে কৃষকরা দাবি করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৯ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষ করা হয়েছে। গত মওসুমে বোরো ও আউশ ধানের ফলন বিপর্যয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারে এলাকায় অনেক বেশি জমিতে বোর আবাদ করা হয়েছে। আর ফলন হয়েছে ভালো। পুরোদমে ধান কাটা-মাড়ায় কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন এক মাত্র ভয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ থেকে রক্ষা পাওয়া গেলে তাদের কষ্টের ফসল তুলতে পারবে ঘরে। এদিকে কৃষির উপকরণসহ সকল দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি কৃষকরা চাচ্ছেন ঘামে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য। ধানের উপযুক্ত মূল্য না হলে আগামীতে ধান চাষ ব্যাহত হবে এমনটি আশঙ্কা সুধীমহলের। উপজেলার বালানগর, সগুনা, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর বীজ সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধানের চাষ এবারের চেয়ে প্রায় অর্ধেক উৎপাদন হয়েছিল। এবারে কৃষকরা পুষিয়ে নিতে গত বছরের থেকে প্রায় দ্বিগুণ ধান চাষ ও উৎপাদনে তারা ঝুঁকেছেন। বালানগর গ্রামের কৃষক আঃ মান্নান জানান, ২ বিঘা জমিতে এবারে বোরো ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ১০ কাঠা জমির আগাম স্থানীয় বি-২৮ জাতের ধান কাটা হয়েছে। ধানের ফলন অত্যন্ত ভালো। একইভাবে শ্যামপুর গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, জমির ধান বেশি ভাগ পেকে গেছে, ধানের ফলন গত কয়েক বছর থেকে ভালো। তবে সব জিনিসের দাম বেশি হবার কারণে শ্রমিকের দামও বেড়ে গেছে। ফলে ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে পোষাবেনা। গোপালপুর গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন জানান, ১ বিঘা জমিতে এবারে বোরো ধান চাষ করতে ১৮/২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে ১০৫০/১১০০ টাকা দামে ধান বিক্রি চলছে। শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধিতে ধান চাষে বিঘা প্রতি ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে। একইভাবে নন্দনপুর গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেন, মোহম্মাদপুর গ্রামের কৃষক কামাল উদ্দিন, শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল করিম জানান, গত বছরের তুলনায় বেশি লাভের আসায় এবারে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা।