কলারোয়ায় ইরি -বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক - কৃষাণীরা। প্রতিবছর খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও লাভের আশায় ব্যাপক পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ করেন কৃষকরা। বর্তমান কলারোয়া উপজেলার মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার মহোৎসব । কৃষকরা তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে তোড়জোড় শুরু করেছেন।
এবার কলারোয়া উপজেলায় অধিকাংশ কৃষি জমিতে ইরি -বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অনুকূল পরিবেশে ধানের ফলনও হয়েছে আশাতীত। তবে কালবৈশাখী ঝড়ের আতঙ্কে রয়েছেন কৃষকরা। ঝড়ের তান্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যেতে পারে ক্ষেতের ফসল। তাই ঝড়ের আশঙ্কায় পাকা আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আকাশে উত্তর পূর্ব কোণে কালো মেঘ জমতে দেখলেই মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে। মাঠ থেকে ধান কেটেই দ্রুত নেওয়া হচ্ছে বাড়ির আঙ্গিনায়। সাথে সাথে ধান মাড়াই মেশিন দিয়ে ধান ছাটাই করে বস্তা ভর্তি করছেন কৃষকরা। কাঁদপুর গ্রামের মাছুম বিল্লাহ জানায়, তিনি লোকের জমি ভাগে নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘা জমি থেকে বিশ বস্তা (২০/২৫মণ) ধান পাওয়ার আশা করছেন তিনি। প্রতি বস্তায় ধানের পরিমাণ ৬০ কেজি অর্থাৎ দেড় মণ। সেই হিসেবে ৫ বিঘা জমিতে তিনি ১০০বস্তা ধান পাওয়ার আশা করছেন। শাকদাহ গ্রামের কৃষক আজিজুল হক ও ভূট্টো খান জানান, এবার বোরো চাষে পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় আল্লাহ এবার যে পরিমান ফলন দিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ এবং কীটনাশক ব্যবহার অনেকটা কম হয়েছে। তবে তেল, সার, ও কীটনাশক ব্যবহারে খরচ কিছুটা বেড়েছে।
সাবেক ইউ পি সদস্য মোঃ সাহাদাৎ ও আজাহারুল বলেন, কৃষকরা বোরো ধানের ন্যায্য বাজার মূল্য পেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম রয়েছে। ইতিমধ্যে কলারোয়া উপজেলার নকাটির বিল, জোড়া পোলের বিল, চিংড়ি কুড়ার বিল, মুরারীকাটির বিল, আবাদ পাড়ার মাঠ, শাকদাহ মাঠ পাড়ার বিল সহ কলারোয়া উপজেলার মৎস্য ঘেরাঞ্চলের কৃষি জমিতে রোপন করা বোরো ধান কাটা ও মাড়াই করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কিন্তু যারা সরিষা কেটে রোরো ধান রোপন করছিলেন তাদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। আগাম বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে সঠিক ভাবে ধান ঘরে তুলতে পারবে কিনা। রাইটা গ্রামের কৃষক আলমগীর বলেন আমি খ্বু চিন্তায় পড়েছি। সরিষা কেটে ধান চাষ করেছি।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ এনামুল হক জানান, এবছর কলারোয়া উপজেলায় ১২ হাজার ৩ শত ৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ইরি -বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। বোরো ধান কাটার মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা নির্বিঘ্নে ধান ঘরে তুলতে পারবেন। কলারোয়ায় বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হয়েছে যার ফলন বিরি -৮৮ (২৫/২৬) মণ, ইন্ডিয়া রড় মিনিকেট (২৭/২৯)মণ ,আঠাশ (২৫/২৬) মণ, রড় মিনিকেট (২৭/২৯) মণ ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এছাড়া সরকার এবার কৃষকদের নিকট থেকে ন্যায্য মূল্যে বোরো ধান ক্রয় করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, কলারোয়া উপজেলার কৃষকেরা এবার ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন। যারা সরিষা তুলে ধান করেছেন তাদের কে রোদ হলে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেন।