নেত্রকোনা সংবাদদাতা : চলতি আমন মৌসুমে নেত্রকোনা জেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯শত হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ এবং ৪ লাখ ২৫ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
মৌসুমের শুরুতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও, গত দুই সপ্তাহের পর্যাপ্ত বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে যাওয়ায় তারা এখন চাষাবাদ ও ধান রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কৃষকরা আশা করছেন—আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমনের ফলন আগের চেয়ে ভালো হবে।
জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কেউ জমি চাষ করছেন, কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন, আবার কেউ দলবদ্ধ হয়ে চারা রোপণ করছেন। ১০ উপজেলার মধ্যে ৪টি হাওর অধ্যুষিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার জমি পানির নিচে থাকে, ফলে সেখানে আমন আবাদ হয় না। অধিকাংশ কৃষকের নিজস্ব ট্রাক্টর না থাকায় কাঠা প্রতি নির্দিষ্ট ভাড়ায় অন্যের ট্রাক্টর ব্যবহার করতে হচ্ছে।
সেচের খরচ না থাকলেও কৃষি শ্রমিক সংকট কৃষকদের সমস্যায় ফেলেছে। বর্তমানে স্থানভেদে শ্রমিকদের মজুরি কাঠা প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। কৃষকরা দেশি জাতের পরিবর্তে হাইব্রিড জাতের ধান চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।
আটপাড়া উপজেলার রূপ চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আকিকুর রেজা খান খোকন জানান, এ বছর তিনি ৩০ কাঠা জমিতে আমন চাষ করছেন, এর মধ্যে ১০ কাঠায় ইতিমধ্যেই রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে।
কেন্দুয়া উপজেলার দুল্লী গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া বলেন, ‘সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভ খুবই কম হয়। অনেক সময় খরচ আর বাজারমূল্য প্রায় সমান হয়ে যায়। তাই কৃষি ঋণ, প্রণোদনা, বীজ ও সার সহজলভ্য হলে কৃষকরা আবার উৎসাহ পাবে।’
নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, শনিবার পর্যন্ত জেলায় ৩৫ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে বিসিআইসি ডিলার ও প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে সাব ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য পর্যাপ্ত সার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।