চাঁপাইনবাবগঞ্জের খরস্রোতা পুনর্ভবা মহানন্দা নদী নাব্য সঙ্কটে

শফিকুল ইসলাম, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট ও সদর উপজেলায় প্রায় ১০ লাখ লোকের আর্শিবাদের পূণর্ভবা মহানন্দা নদী মরণবাঁধ ফারাক্কার প্রভাবে এবং নদী খনন না করায় পলি জমে ভরাট হয়ে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা পড়ে দিন দিন অর্থনীতি বিপর্যন্ত। অন্যদিকে কৃষি উৎপাদনে দারুণ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়াতে এখন চারটি উপজেলাবাসীর জন্য এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪টি উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী তাদের প্রধান সমস্যা পূণর্ভবা মহানন্দা নদী সংস্কার, কিন্তু সংস্কারের কোন বাস্তব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। নলকূপে পানি না পেয়ে সেচের অভাবে উপজেলার হাজার হাজার একর জমির ফসল উঠাতে দ্বিগুণ খরচ করে কৃষকরা সর্বস্বান্ত। পানির খরচ যোগাতে মহাজনদের নিকট চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কৃষকরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। অনেক

কৃষক হালের বলদও বিক্রয় করে ঋণ পরিশোধ করে সংসার চালাচ্ছে। এভাবে পূণর্ভবা-মহানন্দা নদীর উপর নির্ভরশীল ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট ও সদর উপজেলার অর্থনীতি দিনদিন ঝিমিয়ে পড়ছে। ভোলাহাট, পোল্লাডাঙ্গা, মুশরীভূজা, দলদলী, আলমপুর, কাশিয়াবাড়ী, শামপুর, ব্রজনাথপুর, আলিনগর, মকরমপুর, গোমস্তাপুর, চৌডালা, মুল্লিকপুর, গোবরাতলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মহানন্দা নদী চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোহনপুরে পদ্মা নদীতে গিয়ে মিশেছে। মহানন্দা নদী দিয়ে বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে ভারত থেকে নেমে আসা পানি উপচিয়ে নদীর উভয় তীরের আবাদী ফসল ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অপরদিকে পলি ও বালি এসে ফসলি জমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বালি চাপা পড়ে জমির অনাবাদী হয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ী ঢলের সাথে বালু এসে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তর-দক্ষিণ দিকে গোমস্তাপুর, মল্লিকপুর, চৌডালা, মকদামপুর, চৌভালা, আনিসাহাপুর, ভোলাহাট পর্যন্ত পলি জমে মহানন্দা নদীর বিলীন হতে চলেছে। চলতি শুকনো মওসুমে রোকনপুর থেকে ১১ মাইল দীর্ঘ কাজিগ্রাম পর্যন্ত বর্ষাকালে নৌকা, লঞ্চ চলাচল করতো। সড়ক পথের ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় এখন মানুষ বাস, সিএনজি, অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত ভ্যান ইত্যাদিতে চলাচল করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীতে রাবার ড্যাম তৈরি এবং নদী খনন কাজ শুরু করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তা অপ্রতুল বলে নদীর দুই তীরের কৃষকরা জানান।