এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি (সাতক্ষীরা) : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে লবণাক্ত জমিতে বাড়ছে তরমুজ চাষ। অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় পতিত জমিতেও প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষে নেমেছেন অনেকে। জমি লবণাক্ত হলেও উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এবছর ৪৬৭ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে,যা গত বছরের তুলনায় ৩৪০ হেক্টর বেশি। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ইউনিয়নের ফকরাবাদ, বুড়িয়া, নড়েরাবাদ, গোয়ালডাঙ্গা ও বামনডাঙ্গা বিল এখন সবুজের সমারোহ। অধিকাংশ গাছে ফুল ফোটার পাশাপাশি ফলন আসতে শুরু করেছে। নারী শ্রমিকরা কেউ তরমুজ গাছের পরিচর্যা করছেন,কেউবা দূরের খালে কিংবা পুকুরে জমা পানি সেচযন্ত্রের সাহায্যে পাইপ দিয়ে আনা হচ্ছে খেতে সেই পাইপ উচু করে ধরে রাখছেন,আবার কেউ গাছের চারিপাশে পানি দিচ্ছেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,৪ বছর আগেও বড়দল ইউনিয়নের বিল গুলোতে আমন ধান চাষের পর জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। বিলগুলো গোচরণ ভূমি হিসাবে ব্যাবহার করা হতো,এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে মাটিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যেত,তাই বৃথা পরিশ্রম হবে ভেবে কেউ চাষাবাদের চেষ্টাও করতো না। এখন সেই জমিগুলোই স্বপ্ন দেখাচ্ছে তরমুজচাষিদের। অল্প সময়ে বিনিয়োগের দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ লাভ হওয়ায় দিন দিন তাঁদের ভরসা হয়ে উঠছে লবণসহিষ্ণু তরমুজ চাষ। তরমুজের বীজ রোপণ থেকে ফল উত্তোলন পর্যন্ত সময় লাগে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন মাস। প্রতি বিঘায় খরচ হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। আর ভাগ্য ভালো হলে তরমুজ বিক্রি হয় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা।
বড়দল ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নাজমুস সাকিব বলেন,ক্লাইমেট স্মার্ট প্রকল্পের মাধ্যমে তরমুজ চাষের জন্য ৪০টি মিনি পুকুর খনন করা হয়েছে যেখানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে সেচ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং একই প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় তরমুজ চাষের প্রযুক্তির উপর ৪ ব্যাচ প্রশিক্ষণ,সোলার পাম্প,ডিজেল চালিত সেচ মেশিন ও প্রদর্শনী প্রদান করেছি এবং উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদেরকে তরমুজ চাষাবাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত মাঠের অবস্থা সন্তোষজনক এবং আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করছি এ বছরও প্রচুর লাভ হবে এবং পরবর্তী বছরে আরো নতুন করে ৩ থেকে ৪ শত হেক্টর এক ফসলি জমি তরমুজ চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।