DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

কৃষি

মানিকগঞ্জে বাড়ছে গাজর চাষ ॥ ৫০ কোটি টাকা বিক্রির সম্ভাবনা

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় প্রতিবছরই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় গাজর। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের অঞ্চলের সঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এখানকার গাজরের চাহিদাও বেশি।

উপজেলা সংবাদদাতা
Printed Edition
Untitled-2

এম এ কাইয়ুম চৌধুরী, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় প্রতিবছরই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় গাজর। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের অঞ্চলের সঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এখানকার গাজরের চাহিদাও বেশি। খেতে মিষ্টি হওয়ায় দেশজুড়ে চাহিদার পাশাপাশি সুনামও রয়েছে। বেলে দোঁআশ মাটিতে গাজরের ফলনও বেশ ভালো হয়। ফলে স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে গাজরের আবাদ। আর চলতি মৌসুমে গাজরচাষিরা ৫০ কোটি টাকার গাজর বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছে জেলার কৃষি অধিদপ্তর।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মৌসুমের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে গাজর তোলা শুরু করে কৃষকেরা। যা মার্চ মাস পর্যন্ত চলে। গাজর পরিপক্ব হতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে। গত বছর ৯৫০ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হলেও চলতি বছরে বেড়েছ ১০ হেক্টর, এ বছর ৯৬০ হেক্টর জমিতে গাজর আবাদ করছে কৃষকেরা। তবে এর মধ্যে ৯৫০ হেক্টরই সিংগাইর উপজেলায়। এই উপজেলায় উৎপাদিত গাজর দিয়ে দেশের চাহিদার ৪০ শতাংশ মেটানো সম্ভব বলে জানায় কৃষি অফিস।

সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, সিংগাইর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই কৃষকেরা গাজরের আবাদ করে থাকে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাজর আবাদ করা হয় জয়মন্টপ ইউনিয়নের দুর্গাপুর, চর দুর্গাপুর, ভাকুম, চর ভাকুম, পূর্ব ভাকুম, পশ্চিম ভাকুম গ্রামে। লাভজনক হওয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে গাজরের চাষ। গাজরের গ্রাম হিসেবেই এসব গ্রামের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরে জমি থেকে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষি শ্রমিকরা। দল বেঁধে গাজর তোলার কাজ করছেন তারা। শ্রমিকদের সঙ্গে গাজর ব্যবসায়ী ও কৃষকও রয়েছেন ফসলের মাঠে। গাজর তুলে সারিবদ্ধভাবে জমিতে ফেলে রাখা হয়, এরপর বস্তায় ভরে গাজর পরিষ্কার করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মিলে (যেখানে গাজর পরিষ্কার করা হয়)। সিংগাইর উপজেলার জয়পমন্টপ ইউনিয়নের পূর্ব ভাকুম গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে দেখা মিলবে গাজর তোলার এমন দৃশ্য। সিংগাইর উপজেলার চর আজিমপুর গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেন। প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি সাত বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছেন। আলাপকালে তিনি বলেন, এ বছর গাজর চাষে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবে আমি গাজর বিক্রি করেছি সাত লাখ টাকার মতো। এতে চাষের খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৪০ হাজার টাকার মতো লাভ রয়েছে। অনেক চাষিরাই গাজর চাষ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন।