চীনা সরকারের আগ্রহ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় চীনে আমের প্রথম শিপমেন্ট উদ্বোধন করা হয় গতকাল বুধবার। হযরত শাহ্জালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্য মো: আনোয়ার হোসেন এবং ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মি. ইয়াও উয়েন সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকের প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যম প্রতিনিধিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে আম রপ্তানি শুরু হয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। চলতি অর্থবছরে আমের রপ্তানি ১০ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে মর্মে বাণিজ্য উপদেষ্টা উল্লেখ করেন। বাণিজ্য ঘাটতি প্রশমনের লক্ষ্যে চীনে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই বিনা-শুল্কে চীনের বাজারে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের আম যাচ্ছে যা অত্যন্ত আনন্দায়ক।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে প্রায় ২৪ লাখ টন আম উৎপাদিত হবে। গত বছর বাংলাদেশ হতে ২১টি দেশে আম রপ্তানি হয়। তন্মধ্যে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইতালি ও সিঙ্গাপুরসহ মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের কয়েকটি গন্তব্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের আমের পরিচিতি বাড়ানোর পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের লক্ষ্যে আম রপ্তানির গুরুত্ব অপরিসীম। উন্নতমানের আমের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানামুখী কর্মকা- চলমান রয়েছে। আম রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে ইতোমধ্যে ১৯-২০ মে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাগান সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

আম রপ্তানিকারক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত এক সভায় এ সেক্টরের উন্নয়নে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তথ্য আহরণ করা হয়। আমের শেলফ লাইফ বৃদ্ধিকরণ, পর্যাপ্ত হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট সুবিধা সৃষ্টিকরণ, রাসায়নিকের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, উন্নতমানের প্যাকেজিং, দেশের বাণিজ্যিক আম উৎপাদকগণকে একটি অভিন্ন প্লাটফর্মে আনয়ন, ফ্রুট ফ্লাই নিয়ন্ত্রণ, উত্তম কৃষি চর্চার যথাযথ অনুসরণ, স্যানিটারি ও ফাইটো-স্যানিটারি সম্পর্কীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ, কুল চেইন বজায় রাখা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের আরও গুরুত্বারোপ করতে হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট উৎপাদক ও রপ্তানিকারকগণ অভিমত প্রকাশ করেন। এ লক্ষ্যে কৃষিভিত্তিক একটি ইপিজেড স্থাপন, আম নীতিমালা প্রণয়ন, বাগানসমূহে সোলার প্যানেল স্থাপন, আম উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের অনুকূলে সহজ শর্তে ঋণদান জোরদারকরণ, প্রান্তিক পর্যায়ে কোয়ারেন্টাইন সুবিধা বিস্তৃতকরণ ও প্যাকিং হাউজ সুবিধা সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।