যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান তৃতীয় দফার বাণিজ্য আলোচনায় অংশ নিয়ে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে বাংলাদেশ। শুল্ক হ্রাসের ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা—এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময়) সকালে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সাংবাদিকদের তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে ইতিবাচক দিকনির্দেশনা রয়েছে।

তবে তিনি আরও বলেন, শুল্ক কতটুকু কমবে, তা এখনই নিশ্চিত নয়। আলোচনা আজ এবং আগামীকালও চলবে। আমরা আশাবাদী, বাংলাদেশের জন্য কিছু ভালো ফল আসবে।”

ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৩০ থেকে বিকেল ৫:৩০ পর্যন্ত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী এবং ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ এবং তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শুল্ক ও বাণিজ্য কর্মকর্তারা অংশ নেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ৬০টি দেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। যদিও ৯ এপ্রিল তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়, পরবর্তীতে ৮ জুলাই নতুন করে জানানো হয়, বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

বাংলাদেশি পণ্যে বর্তমানে গড়ে ১৫.৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপিত হয়। নতুন হার কার্যকর হলে তা ২২–২৩ শতাংশে পৌঁছায়। আর পাল্টা শুল্ক যুক্ত হলে তা দাঁড়াবে প্রায় ৩৫ শতাংশে—যা দেশের রপ্তানি শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বিস্তারিত অবস্থানপত্র পাঠিয়েছে। গত ২৩ জুলাই প্রেরিত সেই কাগজে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়। সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়, যেখানে ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ১২৩ বিলিয়ন ডলার, সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘাটতি মাত্র ৬ বিলিয়ন। সেই তুলনায় ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক।