মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত নতুন শুল্ক কার্যকরের আগেই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। দুই দেশই এই লক্ষ্য অর্জনে তৎপর রয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের শীর্ষ বাণিজ্য কর্মকর্তা।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, “আমরা পারস্পরিক বাণিজ্য সুবিধাজনক করতে একটি খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত করেছি। এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে বলে সরকার আশাবাদী।”

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ২০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায়। পুরো রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে গার্মেন্টস খাত থেকে, যা বর্তমানে সংস্কারের পথে রয়েছে। এই খাতকে কেন্দ্র করেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে শুরু হয়েছে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা তুলাজাত পণ্যের ক্ষেত্রে পূর্বের ১৬ শতাংশের দ্বিগুণেরও বেশি। তবে ৯ জুলাই পর্যন্ত এই শুল্ক কার্যকর স্থগিত রাখা হয়েছে, এবং অস্থায়ীভাবে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক চালু রয়েছে।

ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা জানিয়েছেন, ৩ জুলাই (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টা) ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR)-এর মধ্যে শুল্ক হ্রাস সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিনি আরও জানান, এই বিষয়ে নিয়মিতভাবে বৈঠক চলছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় ২৮টি আলোচনা ও দলিল আদান-প্রদান হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে মার্কিন প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে বিমান কেনা, এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম, তুলা, তেল ও গ্যাস আমদানির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৩৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যেখানে আমদানি করেছে ২.২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই ঘাটতি কমাতেই চুক্তির পথে অগ্রসর হচ্ছে দুই দেশ।

চুক্তিটি কার্যকর হলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।