বিজিএমইএ সিনিয়র সহ-সভাপতি এনামুল হক খান বাবলু বলেছেন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার ঘটনা পোশাক শিল্পের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। তিনি বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এ ঘটনায় আমরা বিজিএমইএ বোর্ড গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিশেষ করে পোশাক শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এনামুল হক আরও বলেন, সাধারণত হাই-ভ্যালুড পণ্য এবং জরুরি শিপমেন্টের ক্ষেত্রে আকাশপথে জাহাজীকরণ করা হয়- এমন পণ্য কার্গো ভিলেজে ছিল। অগ্নিকাণ্ডের ফলে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পণ্যসামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ধ্বংস হওয়া মালামালের মধ্যে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা পোশাক, পোশাক তৈরির মূল্যবান কাঁচামাল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- অনেক স্যাম্পল (নমুনা) পণ্য ছিল। এই স্যাম্পলগুলো সরাসরি নতুন ব্যবসার পথ উন্মোচন করে এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য অপরিহার্য। এই স্যাম্পলগুলো হারানো মানে ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়া।

ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি। সদস্যদের নির্ধারিত ফরমেটে ক্ষতি হওয়া পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তথ্য দ্রুত সংগ্রহ করার জন্য একটি অনলাইন ডাটা কালেকশন পোর্টালও খোলা হয়েছে।

পোশাক শিল্পের এই নেতা বলেন, আমাদের সদস্যরা প্রায় সবাই এয়ারে পণ্য পাঠান। প্রতিদিন ২০০-২৫০টি কারখানার পণ্য আকাশপথে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ‎বিজিএমইএ খুব দ্রুত সমস্ত সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে একটি সমন্বয় সভা করবে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পোশাক শিল্পের এই বিপুল ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের প্রতি জোরালোভাবে কিছু দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবিগুলো হলো- ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের জন্য সার্বিক সহযোগিতা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। পোশাক শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার স্বার্থে দ্রুততার সঙ্গে নতুন শিপমেন্টের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমদানিকৃত পণ্য যাতে দ্রুত ছাড় করা যায়, সেই লক্ষ্যে টার্মিনাল ৩-এ নতুন জায়গা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, আগে যেখানে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগত, এখন ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই পণ্য ক্লিয়ার করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে কাস্টমসের সঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।