গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ঈদের আগে বাজারে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হওয়া অনেক সবজির দাম এখন চড়া। ঈদের আগে টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন খুচরা বাজারে তা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা প্রায় দ্বিগুণ। একইভাবে ঈদের আগে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলার দাম ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পৌঁছেছে। বেগুনের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ১০০ টাকায়, কাঁকরোল ৬০ টাকা থেকে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, ঢেঁড়স ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় ও শসা ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাউ প্রতিপিস ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে কিছু সংখ্যক সবজির দাম কমেছে। ঈদের আগে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কচুর লতি এখন ৮০ টাকায় নেমে এসেছে। চিচিঙ্গাও ৬০ টাকা থেকে কমে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পেঁপে প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে, যা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাজর ৬০ টাকা কেজি দরে এবং কাঁচা কলা প্রতি হালি ৫০ টাকায়, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় এবং মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবজি বিক্রেতারা জানান, ঈদুল আজহার আগে সবজির পাইকারি বাজারে দাম কম ছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। রাজধানীর বাজারে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম থাকায় ঢাকার বাইরে থেকে এখনও সবজি ঠিকমতো আসছে না। এ কারণেই সবজির দাম কিছুটা বাড়তি।

অন্যদিকে সবজি কিনতে আসা একাধিক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঈদের পর সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ঈদের আগে যে টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কিনেছি, আজ তা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এটা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য বাড়তি চাপ।

এদিকে মাছ ও মুরগির দামও বেড়েছে। বাজারে ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৬৫-১৭০ টাকা, কক মুরগি ২৬০-২৭০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০-৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা, সাদা ডিম ১১০ বিক্রি হচ্ছে টাকা দরে।

মাছের বাজারে আকার, ওজন ও মান অনুযায়ী ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০০-২৮০০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই ৩৫০-৫৫০ টাকা, কাতল ৩৫০-৪৫০ টাকা, বেলে ৮০০-১২০০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০-৭০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, কৈ (চাষের) ২৫০-৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০-১০০০ টাকা, শিং ৫০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-১২০০ টাকা, চিতল ৬০০-১২০০ টাকা, বাতাসী ১২০০-১৪০০ টাকা এবং রূপচাঁদা মাছ ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের আগে থেকে এখন পর্যন্ত কোনও পরিবর্তন আসেনি আদা, রসুন, পেঁয়াজের বাজারে। মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন ক্রস পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি সাদা আলু ২০ টাকা, লাল আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বগুড়ার আলু। এছাড়া দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০-২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০-২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানের পণ্যের দাম আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি ছোট মসুর ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাশকালাইয়ের ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম ১৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১২২০ টাকা, কিসমিস ৬০০-৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ১৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি ১১৫ টাকা, খোলা চিনি ১১০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৯ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।