দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিত্যপণ্যের বাজার রয়েছে লাগামহীন। গত সপ্তাহে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছিল; কিন্তু হঠাৎ করে পেঁয়াজের কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১২০টাকা কেজি হয়ে গেছে। মজুদ কমে যাওয়ার কারণে এই দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। অপরদিকে অন্যান্য সবজির দামও বেড়ে গেছে। বাজারে দু-একটি পণ্য ছাড়া অধিকাংশই আকাশচুম্বী। সবজির দাম কিছুটা উঠানামা করলেও এখনও বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার বেশি দামে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ভারতীয় টমেটো ১২০ টাকা, দেশি টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০-১৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০-১০০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১২০ টাকা, শিম ৮০-১০০ টাকা, দেশি শসা ৮০-১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০-১০০ টাকা, পটল (হাইব্রিড) ৮০ টাকা, দেশি পটল ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০-১০০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০-১৬০ টাকা, ধনেপাতা (মানভেদে) ২০০-৩০০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-১২০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা। এছাড়া, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা করে।
এদিকে হুট করেই বেড়ে গিয়েছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। ক্রস ও দেশি, দুই ধরনের পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এরমধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে। দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকা, সাদা আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৩০ টাকা, দেশি রসুন ৮০-১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৬০-১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০-২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। চায়না রসুনের দামও বেড়েছে ২০-৪০ টাকা। আর দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
বিক্রেতাদের ভাষ্যমতে, শীত আসছে বা শীতকালে মুরগীর দাম কম থাকে। তবে এখন দাম কিছুটা বাড়তি। তবে কক মুরগির দাম কমেছে। বাজারে গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি দরে। খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে। বয়লার মুরগি ১৭০- ১৮০ টাকা, কক মুরগি ২৬৩- ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯৩-৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি ডজন মুরগির লাল ডিম ১২০ টাকা এবং সাদা ডিম ১১০-১১৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০-১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ ৯০০- ২৯০০ টাকা, রুই মাছ ৪০০-৬৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, কালবাউশ ৪০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা, কাচকি মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, কৈ মাছ ২৫০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০- ১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, বেলে মাছ ১০০০- ১২০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০-৮০০ টাকা,বোয়াল মাছ ৫০০-৯০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মুদি দোকানের পণ্যের দামে কোনও পরিবর্তন আসেনি। কেবল মুশড়ের ডালের দাম কমেছে ১৫ টাকা ও খোলা চিনির দাম কমেছে ৫ টাকা। এছাড়া অন্য সব পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। প্রতি কেজি প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ৯০-১৩০ টাকা, ছোট মুশড়ের ডাল ১৫৫ টাকা, মোটা মুশড়ের ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা মাসকলাইয়ের ডাল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০ -১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ৯৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।