একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। বিশেষ করে সবজি বাজার লাগামহীন। অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও কমছে না। অল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছেই। অবিলম্বে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ভোক্তাগন।
বিক্রেতারা বলছেন, আবার সবজির দাম বেড়েছে। হয়তো বৃষ্টির কারণে বেড়ে গেছে। এখন বাজারের যে অবস্থা, খুব একটা দাম কমার সম্ভাবনাও দেখি না। ভোক্তারা বলছেন, বাজারে সব কিছুরই দাম বেশি। সবজির দামে কোনো লাগাম নেই। এ রকম হলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ কী খেয়ে বাঁচবে?
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় গতকাল প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। একই অবস্থা ডিমের বাজারে। মাছের দামও আকাশছোঁয়া। তবে কিছুটা স্বস্তি এসেছে মুরগির বাজারে। বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় টমেটো ১২০ টাকা, দেশী গাজর ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ১২০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১৬০ টাকা, শিম ২৪০ টাকা, দেশী শসা ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, পটল ৮০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, মূলা ১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, ধনেপাতা (মান ভেদে) ৩০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০-১০০ টাকা, চাল কুমড়া ৭০-৮০ টাকা। প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রতি কেজিতে চায়না গাজর, সব ধরনের বেগুন, করলা, কাঁকরোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা, বরবটি, মূলা, লাউয়ের (প্রতি পিসে) দাম বেড়েছে ২০ টাকা করে। পটল, চিচিঙ্গা, ধুন্দলের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। শিমের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে আগের মতোই।
লাগামহীন দামের মধ্যে আলু-পেঁয়াজ, আদা-রসুনের বাজার এক রকম স্থিতিশীল। কোনো পরিবর্তন আসেনি এসব পণ্যগুলোর দামে। কেবল চায়না আদার দাম প্রতি কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। দেশী পেঁয়াজ ৮০ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকা, সাদা আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৩৫-৪০ টাকা, দেশী রসুন ১০০-১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০-১৬০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০-১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে প্রতি ডজন মুরগির লাল ডিম ১২৫-১৩০, সাদা ডিম ১২০ এবং হাঁসের ডিম ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৬৩-১৮০ টাকা, কক মুরগি ২৬০-২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা এবং দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজি দরে। প্রতি ডজনে লাল ডিমের দাম ৫-১০ টাকা, সাদা ডিমের দাম ৫ টাকা বেড়েছে। তবে হাঁসের ডিমের দাম কমেছে ডজনে ১০ টাকা। প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০-১৭ টাকা, কক মুরগির দাম ১০-৪০ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম ৫-১০ টাকা কমেছে। এছাড়া গরুর গোশত ৭৮০ টাকা কেজি এবং খাসির গোশত ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ১০০০-২ হাজার ৪০০ টাকা, রুই ৩০০-৭০০ টাকা, কাতল ৩০০-৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১ হাজার ৩০০ টাকা, কৈ ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৭০০ টাকা, শিং ৪০০-১ হাজার ২০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৮০০ টাকা, বেলে ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১ হাজার ২০০ টাকা, রূপচাঁদা ১০০০-১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ৯০-১৩০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৫৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০৫ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাশকালাইয়ের ডাল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৪৫০-১ হাজার ৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ১০০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকা। এছাড়া এলাচ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১ হাজার ৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১ হাজার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।