রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। বাজারে গিয়ে এখন আর আগের মতো ঝুড়ি ভর্তি করে কেনাকাটা করা সম্ভব হচ্ছে না। বাজার করতে এসে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ, সরকার সব করতে পারলেও বাজারদর নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারের কাছে সরকার অসহায়। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে-সবজি, মাছ, ডিম, মুরগি থেকে শুরু করে চাল-ডাল পর্যন্ত সব কিছুর দাম বেড়েছে।

কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আলু, টমেটোসহ প্রতিটি সবজির কেজি প্রতি দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। শীত মৌসুম ঘনিয়ে এলেও সবজির দাম এখনো সাধারণের নাগালের বাইরে। অনেকেই মাংস খাওয়া এখন বিলাসিতা মনে করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে-তারা বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করছেন। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে- বেশির ভাগ সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো সবজির দাম আরও বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, মোটামুটি দুই মাসের বেশি সময় ধরে চড়া দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। শীতের সবজির সরবরাহ শুরু হলে দাম কমতে পারে।

বাজারে দাম বেশি থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১২০ টাকা, গাজর ও শিম প্রতি কেজি ১০০ টাকা। এ ছাড়া করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা ও বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ঢ্যাঁড়শ প্রতি কেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ঝিঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৫০ টাকা ও লাউ প্রতি পিস ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর পেঁয়াজের কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।

এ ছাড়া, প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ফুলকপি প্রতি পিস (ছোট) ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস (ছোট) ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কচু প্রতি কেজি ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৩০ টাকা ও আলু প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ডজনে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা ও প্রতি ডজন সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এদিকে, নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে নেই ইলিশ মাছ। তবে চাষের রুই ও কাতলার দাম স্থিতিশীল থাকলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে টেংরা, পাবদাসহ অন্যান্য মাছ।

মুরগির বাজার আগের মতো আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, আর সোনালি মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। এছাড়া লাল লেয়ার কেজি প্রতি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। গরু ও খাসির মাংসের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, একসঙ্গে সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় মাসের খরচ মেলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আর বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে দাম কিছুটা কমতে পারে।