মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা : সবজির বাজার কিছুদিন স্বস্তিতে থাকলেও এখন আর সেই স্বস্তিটা নেই মাধবদী বাজারে। এখন আলু আর পেঁপে ছাড়া কোনো সবজির দামই ৩০ টাকার নিচে নেই। প্রায় সব সবজির দাম ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন গোল হোক বা লম্বা, দাম চড়েছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। এদিকে দুই দিনের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ডিমের দর ১৩০ টাকা থেকে এক লাফে ১৫০ টাকায় উঠেছে। অপরদিকে পেঁয়াজের বাজারে ঝাঁজ বেড়ে এখন ৫০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের ঝাঁজে সাধারণের চোখের পানি গড়াচ্ছে মাটিতে। আমদানির অনুমতি না থাকায় পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলেন বিক্রেতারা।

রাতারাতি সবজির দাম চড়ায় বাজারে গিয়ে ক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করছেন। নতুন করে বিপাকে পড়েছেন। মাধবদী কাঁচা বাজারে সবজি কিনতে আসা আনন্দী এলাকার বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কিছুদিন আগেও যে পটোল ৪০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছিল, তা এখন ৮০ টাকা। আগে যে কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হতো তা এখন ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ঝিঙা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, করল্লা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, ঢেড়শ ১০০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৬০ টাকায়। ২০ টাকা কেজির মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।

॥গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কচুর মুখি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাধবদী বাজারের পাইকারি ও খুচরা কাঁচামাল বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন আনু ‘দৈনিক সংগ্রাম’কে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সবজির বাজার বেশ চড়া। দরবৃদ্ধির জন্য সাম্প্রতিক বৃষ্টিকে দায়ী করে তারা জানান, বর্ষায় সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এতে সব ধরনের সবজির সরবরাহ কমেছে। বিক্রেতা মো. রিফাত মিয়া বলেন, বৃষ্টির পর হঠাৎ দরবৃদ্ধি পাওয়ায় তারা অস্বস্তিতে রয়েছেন। গত দুই দিন ধরে ডিমের বাজারও চড়েছে। সবজির দাম বাড়লে ডিমের বিক্রি বেড়ে যায় বলে জানান বিক্রেতারা। পেঁয়াজের দামও প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় উঠেছে। তবে চালের দর স্থিতিশীল। গত ঈদে যে দাম বেড়েছিল, সেখানে থেকে কিছুটা কমেছে। মাছের বাজার আগে থেকেই চড়া। গরুর মাংসের দাম স্থিতিশীল থাকলেও খানিকটা বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা সাইফুল ইসলামও বৃষ্টিকে দায়ী করে জানালেন, বর্ষায় সরবরাহ কমেছে।

তবে মাধবদী বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা বাদল মিয়া জানান, গত এক সপ্তাহে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বাড়েনি। প্রতিশত ডিম এক হাজার ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য জুন পর্যন্ত ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় দর পড়েছিল। তাতে খামারিরা বেশ লোকসানে পড়েন। পরে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন কিছুটা খরচ পুষিয়ে নিতে পারছেন খামারিরা।

এদিকে বিক্রেতারা গত এক সপ্তাহ ধরে সবজির বাজার বেশ চড়া থাকার কারণ হিসেবে দায়ী করছে বৃষ্টিকে আর ক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি মূল কারণ নয়, দাম বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেট।