টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজি ও সামুদ্রিক মাছের দাম বেড়েছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিক্রেতারা বলছেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জেলেরা গভীর সাগরে মাছ ধরতে না পারায় সামুদ্রিক মাছের বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার নগরীর কাজির ডেউরি বাজার, বকশিরহাট, কর্ণফুলী মার্কেট, বহদ্দারহাট বাজার ও রেয়াজুদ্দীন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। কাঁকরোল, ঝিঙা, পটল, ঢেঁড়শ ৭০-৯০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ও বেগুন ১০০-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি-বাঁধাকপি ১২০, কচুরলতি ১০০, কচুরমুখী ৮০ এবং দেশি গাজর ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি ১২০-১৪০ টাকা এবং ধনেপাতা ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতাদের দাবি, বৃষ্টির কারণে আড়তে সবজি আসছে না, আর আগের মজুদ পণ্যের দাম আড়তদাররাই বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
সামুদ্রিক মাছের সরবরাহও হঠাৎ করে কমে গেছে। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জুনের মাঝামাঝি থেকে জেলেরা সাগরে যেতে শুরু করায় জুলাইয়ের শুরুতে বাজারে লইট্যা, পোয়া, রূপচাঁদা, কোরাল, ফাইস্যা, চিংড়ি প্রভৃতির দাম স্বাভাবিক হয়েছিল। কিন্তু জুলাইয়ের শেষভাগে টানা বৃষ্টি ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ দেখা দেওয়ায় মাছ ধরার নৌযানগুলোকে বারবার তীরে ফিরে আসতে হয়েছে।
ফলে সামুদ্রিক মাছের বাজারে আবারও চড়া দর লক্ষ করা যাচ্ছে। বর্তমানে লইট্যা ১৮০-২০০, ফাইস্যা ১৫০-২০০, পোয়া ২৫০-৩০০, শাপলাপাতা ৩৫০-৪৫০, কোরাল ৬০০-৯০০, রূপচাঁদা ৩৫০-৭০০, আইড় ৪০০-৬৫০ এবং চিংড়ি ৬৫০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২০০০-২৪০০, ছোট ইলিশ ১৫০০-১৮০০ এবং দুই কেজির বড় ইলিশ ৩০০০-৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নদী ও খাল থেকে আহরিত মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০-৪৫০, পাবদা ৪০০-৪৫০, টেংরা ৬০০-৭০০, পুঁটি ২০০-২৫০, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০, তেলাপিয়া ২০০-৩০০, শিং ৪০০-৪৫০ এবং পাঙ্গাস ২২০-২৮০ টাকায় মিলছে।
মাংস ও হাঁস-মুরগির বাজারে আগের মতোই চাপা উত্তাপ রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০, সোনালি ২৮০-৩১০, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা, গরুর মাংস ৮৫০-৯৫০ এবং খাসি/পাঁঠার মাংস ১২০০-১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের দাম ৬০০-৭০০ টাকা। ডিমের বাজারে কোনো পরিবর্তন হয়নি— ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১৩০, দেশি ডিম ২৪০ এবং হাঁসের ডিম ২৬০ টাকা।
চালের দামও আগের মতোই উঁচুতে। খুচরায় মিনিটেক ৮০-৮২, ভালো মানের আতপ মিনিকেট ৮৫-৯০, স্বর্ণা ৫৫-৫৭, আর মাঝারি মানের ব্রি-২৮/২৯ চাল ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদি পণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও চিনি ও তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্যাকেট সাদা চিনি ১২৫, খোলা সাদা ১২০, লাল চিনি ১৪০-১৭০ এবং সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৮০-১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবজি ও মাছের দাম আরও কিছুদিন অস্থির থাকতে পারে।