টানা বৃষ্টির অজুহাতে চট্টগ্রামের বাজারে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত কয়েক সপ্তাহের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এক মাসের ব্যবধানে সবজির কেজিপ্রতি দাম অন্তত ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিক্রেতারা দাবি করছেন, বৃষ্টির কারণে সরবরাহ সংকট তৈরি হওয়ায় দাম বাড়াতে হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সবজির একটি বড় অংশ আসে উত্তরবঙ্গ থেকে। সেখানে টানা বৃষ্টিতে ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামেও অব্যাহত বর্ষণে পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রায় মাসখানেক ধরেই বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। যে সামান্য সবজি বাজারে আসছে, তা পাইকারি পর্যায়েই বেশি দামে কিনে খুচরায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার ও কাজীর দেউড়ি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বরবটি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, বেগুন ৮০-১০০ টাকা, কাঁকরোল, ঝিঙা, পটল, ঢেঁড়শ, শসা ও করলা ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ১৫০-১৮০ টাকা, কচুরমুখী, লাউ ও মুলা ৬০-৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, শালগম ৮০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। শুধু মিষ্টিকুমড়া নাগালের মধ্যে রয়েছে, প্রতিকেজি ৩০-৪০ টাকা। মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা এবং বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮০-২০০ টাকায়। ধনেপাতার দামও সমান হারে বেড়েছে। তবে শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়, ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকা, কেজির কম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০-২ হাজার টাকা এবং জাটকা ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে। লইট্যা ২০০-২২০ টাকা, ফাইস্যা ১৮০-২০০ টাকা, পোয়া ২৫০-৩০০ টাকা, শাপলা পাতা মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা, কোরাল ৬০০-৯০০ টাকা, রুপচান্দা ৩৫০-৭০০ টাকা, আইড় ৪০০-৬৫০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০-১২০০ টাকা, রুই ও কাতলা ৩৫০-৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০-২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০-২৮০ টাকা, শিং ৪০০-৪৫০ টাকা, কৈ ২০০-২২০ টাকা এবং পাঙাশ ২২০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পোলট্রির বাজারেও দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৬৫-১৭০ টাকা হয়েছে। দেশি মুরগি কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৬০০-৬২০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০-৩১০ টাকা, পাকিস্তানি কক ৩৫০ টাকা এবং জাতভেদে হাঁস প্রতি পিস ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৮৫০-৯৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ২০০-১ হাজার ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতাদের মতে, আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত এই দাম কমার সম্ভাবনা নেই। ফলে ক্রেতাদের কষ্ট আরও কিছুদিন চলবে।