বাজারে পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও দামে লাগাম নেই। আলু, পেঁপে ও মিষ্টিকুমড়া ছাড়া সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। সামুদ্রিক মাছের মৌসুম হলেও মাছের দামও আকাশছোঁয়া। ডিম, মাংস ও শুকনো পণ্যেও চলছে দাম ওঠানামার খেলা। বাজারের এমন অস্থিরতায় মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর ও ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নগরীর কাঁচাবাজারে সবজির মধ্যে কাঁকরোল, ঝিঙা, পটল, ঢ্যাঁড়স, শসা, করলা প্রতিকেজি ৯০-১০০ টাকা, বরবটি ১২০, বেগুন ৮০-১০০, টমেটো ১৫০-১৮০, কচুরমুখী, লাউ, মূলা ৬০-৮০, কচুর লতি ৮০-১০০, গাজর ১৬০, হাইব্রিড শসা ৬০, শালগম ৮০ এবং ফুলকপি-বাঁধাকপি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু মানভেদে ২৫-৩০ ও মিষ্টিকুমড়া ৩০-৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কাঁচামরিচ ১২০-১৩০, ধনেপাতা ১৫০ টাকা এবং শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০, পুঁইশাক ৪০, লালশাক ৫০ ও মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সামুদ্রিক মাছের মধ্যে লইট্যা ও ফাইস্যা ১৮০-২২০, পোয়া ২৫০-৩০০, শাপলা পাতা ৩৫০-৪৫০, কোরাল ৬০০-৯০০, রূপচাঁদা ৩৫০-৭০০, আইড় ৪০০-৬৫০, চিংড়ি (বাগদা-গলদা) ৬৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া—এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২০০০-২৪০০, ৫০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ ১৫০০, এক কেজির কাছাকাছি ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ এবং জাটকা ৬০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই-আড়াই কেজির বড় ইলিশ কেজি প্রতি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই-কাতলা ৩৫০-৪৫০, পাবদা ৪০০-৬০০, শিং ৪০০-৫০০, টেংরা ৬০০-৭০০, পুঁটি ২০০-২৫০, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০, তেলাপিয়া ২৫০-৩০০, নাইলোটিকা ২২০-২৮০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাঙাস-সিলভার কার্প ২৫০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট চিংড়ির দাম ৭০০-১২০০ টাকা। বিক্রেতাদের দাবি, সাম্প্রতিক এক সপ্তাহেই মাছের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৫০-১০০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে কেজি ১৭৫-১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেশি। সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০, পাকিস্তানি কক ৩৪০-৩৫০, দেশি মোরগ ৬৫০ এবং হাঁস ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০-৯৫০, খাসি ও ছাগলের মাংস ১২০০-১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১৩০, দেশি ডিম ১৮০ ও হাঁসের ডিম ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভারতীয় পেঁয়াজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে কেজি ৮০-৯০, ছোট রসুন ৭৫-৮০, বড় রসুন ১৪০-১৫০, ভারতের কেরালার আদা ১২০ এবং চীনের আদা ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে তেমন পরিবর্তন নেই। মিনিকেট ৭৮-৮৫, আটাশ বালাম ৭০-৭৫, নাজিরশাইল ৮৫-৯০, স্বর্ণা ৫৫-৬০, পাইজাম ৬২-৬৫, বাসমতী ৯৫-১২০, চিনিগুঁড়া ১৩০-১৫০ এবং খোলা পোলাও চাল ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিপণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৪৮-৫০, প্যাকেটজাত আটা (, , , ) ১০০-১১০, খোলা ময়দা ৫৫, প্যাকেটজাত ময়দা ১৪০ এবং নেপালি মসুর ১৬০, মোটা দানার মসুর ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া খোলা সাদা চিনি ১০৫-১১০, প্যাকেট চিনি ১২০, লালচিনি ১১৫, ছোট মুগডাল ১৩০-১৪০, খেসারি ডাল ১০০, বুটের ডাল ১১০, মাষকলাই ১৮০, ডাবলি ৬০, ছোলা ১০০, সয়াবিন তেল (বোতল) ১৯০-১৯৫, খোলা সয়াবিন ১৮০, সরিষার তেল ২৫০, কাজু ১৭০০, পেস্তা ২৭০০, কাঠবাদাম ১২২০, কিশমিশ ৬০০-৭০০, দারুচিনি ৫২০, লবঙ্গ ১৪০০, কালো গোলমরিচ ১৩০০, সাদা গোলমরিচ ১৬০০ ও জিরা ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তারা বলছেন, ‘একটার দাম কমলে পাঁচটার বাড়ে-এভাবে সংসার চালানো দায় হয়ে গেছে।’