আগামী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে জ্বালানি সরবরাহ. এমন মন্তব্য করে বক্তারা বলেছেন, এই খাতে নতুন বিনিয়োগ করা না হলে ২০৩১ সালে সরবরাহ সংকট দেখা দেবে। তাই এ খাতের ধারাবাহিক নীতি কাঠামোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। গতকাল বুধবার বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে তারা একথা বলেন।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে। বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ, চ্যালেঞ্জ ও নীতিগত করণীয় বিষয়ে এ খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ইএমএ পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক আবু চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০২৯ সালে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ৩৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। তাই এখন থেকে নতুন বিনিয়োগ না করলে ২০৩১ সালে বিদ্যুৎÑসংকট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে দেশের বিদ্যমান উৎপাদন সক্ষমতার ৪৮ শতাংশ আছে বেসরকারি খাতের হাতে। তাই নতুন নীতি তৈরিতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, আগামী সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে জ্বালানি সরবরাহ। শুধু সরকারি সংস্থা বাপেক্সের ওপর নির্ভরতায় গত ২০ বছরে সাফল্য আসেনি। তাই গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আনা দরকার। এ নিয়ে এখন সিদ্ধান্ত না নিলে ২০৩১ সালে জ্বালানি সংকট তৈরি হবে।

চা বাগানের ভূমি ব্যবহারের নীতি পরিবর্তন করা গেলে বাগান থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে মনে করছেন এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান। তিনি বলেন, ১০ থেকে ১৫ বছরে রাস্তায় আমরা অনেক বৈদ্যুতিক গাড়ি দেখতে পাব। তখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তাই এ খাতে নীতি কাঠামো প্রয়োজন। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১৩ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মোবারক হোসাইন বিদ্যুৎ খাতে দীর্ঘমেয়াদি নীতি, স্বচ্ছ বিনিয়োগ কাঠামো, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিনিয়োগকে সহজতর করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নিয়ম-নীতি সহজিকরণ এবং দক্ষ জনবল তৈরির ওপর জোর দিতে হবে।য়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বিনিয়োগের জন্য সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটা সব দলের দায়িত্ব। নতুন বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে না। এতে প্রতিবছর কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়া ২৫ লাখ তরুণ কাজ পাবে না। ফলে কাজ না পেয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হবে।

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।