বুয়েটে যৌথভাবে বিদ্যুৎ-জ্বালানির গবেষণাগার স্থাপন করবে বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিল (বিইপিআরসি)। যেকোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গবেষণার সুযোগ থাকবে। গতকাল রোববার বিইপিআরসির কনফারেন্স রুমে ‘বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ ল্যাবরেটরি’ স্থাপনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। চুক্তিতে বিইপিআরসির সচিব গৌতম বাড়ৈ এবং বুয়েটের রেজিস্টার ড. এনএম গোলাম জাকারিয়া নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।

বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন বলেন, আমরা যে কাজটি করছি সেটি পাবলিকের কিংবা রাষ্ট্রের কোন উপকার হলো কিনা! যদি পাবলিকের কিংবা রাষ্ট্রের কোন উপকার না হয়, তাহলে সেটি কাজ হলো না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, চিঠি পাঠিয়েছি এটা কোন কাজের মধ্যে পড়ে না, কাজটি হলো কি না, সেটি বড় বিষয়। পিপিআর মুখস্ত করার কাজ শিক্ষকদের নয়। তবে আমাদেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেখানে আমরা সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি। এটা দেখিয়ে দিতে হবে এটিও কোথাও লেখা নেই, কিন্তু আমরা যদি দেখে না দেই, প্রকল্প বাতিল করলাম তাতে কোন লাভ হলো না। বরং আমরা আগ বাড়িয়ে বলে রাখি, প্রকল্প জমা দেওয়ার আগে যদি দেখিয়ে নেন। আমরা দেখিতে দিলাম এতে কাজও হলো সময়ও বাঁচলো।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসি অধ্যাপক আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, এসব প্রকল্পের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন থাকে, প্রজেক্ট শেষ হলে তখন কিভাবে চলবে। মাঝ পথে যেনো থেমে না যায়। ল্যাবরেটরি কার্যকর রাখতে হলে আপনাদের সক্রিয় সহযোগিতা লাগবে। আমাদের একার পক্ষে চালিয়ে নেওয়া কঠিন।

তিনি বলেন, ইউজিসি মনে করে আমরা শুধু লোক বাড়াই। তাদের কাঠামো অনুযায়ী আমাদের ১০২ জন শিক্ষক দরকার, দিয়েছে মাত্র ১১ জন, তাদেরও হয়তো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমি ৪১ বছরে অনেক গবেষণা করেছি কোন সরকারি তহবিল নেইনি। সরকারি তহবিল নিলে তার হিসাব-ভাউচার রাখাটা কঠিন, অডিট করাতে হয়, নানা রকম জটিলতা। ছোট ছোট বিষয়গুলো বড় ক্ষতি করে। শিক্ষকরা এইসব হিসাবপত্র বুঝে না।

বিইপিআরসির সদস্য (ইনোভেশন) ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের জ্বালানি খাত এখন অনেকটা আমদানি নির্ভর। দিন দিন আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। যে কারণে রিজার্ভের উপর চাপ বাড়ছে। আমদানি কমাতে হলে গবেষণার বিকল্প নেই। যদিও আমাদের গবেষণা অনেক অবহেলিত। এতোদিন ইনোভেশন ধাপে সহায়তা দিয়েছি, এখন ইনকিউবেশন এবং শিল্পায়নের দিকে যাওয়া যাচ্ছি। গবেষণা প্রকল্পে ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থায়ন দিয়ে থাকি। কোথাও কোন খবর পেলে তাদের ডেকে এনে কথা বলছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৬৫ শতাংশ জ্বালানি আমদানি করতে হচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে নিজস্ব রিসোর্স কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান যে সংকট এর থেকে উত্তরণের জন্য গবেষণার বিকল্প নেই। সমস্যার স্থানীয় সমাধান বের করতে হবে। বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার বলেন, ল্যাবরেটরি বুয়েটে তৈরি হচ্ছে, তবে এটি জাতীয় ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করবে, যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়ের গবেষকও এখানে কাজ করার সুযোগ পাবে।

বুয়েট অধ্যাপক হারুনুর রশীদ, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব সচিব মাসুদা খাতুন, বুয়েট ও বিইপিআরসির পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।