সাভার সংবাদদাতা: সাভারে দুটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পুলিশ বলছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের থানা বাসস্ট্যান্ডের আনন্দপুর এলাকায় ক্রাউন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গলার টনসিল অপারেশন করতে ভর্তি হন আশুলিয়ার সাত বছরের শিশু সাহরা আমিন। পরে তাকে এনেস্থিয়া করেন সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা.ইরফান। এসময় তাকে ভুলভাবে টনসিলের অপারেশন করেন এনাম মেডিক্যালের নাক কান গলা আরেক ডাক্তার খন্দকার আবুল বাশার। এসময় অপারেশনের এক ঘণ্টা পরে তার মৃত্যু হয়। পরে মৃত অবস্থায় তাকে এনামে নেওয়া হয়। পরে নিহতের পরিবার মৃত অবস্থায় তার সন্তানকে বাড়ি নিয়ে যান।
এঘটনায় ক্রাউন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, আমাদের হাসপাতালে শিশুটি ডাক্তারের মাধ্যমে ভর্তি হয়। তাই মৃত্যুর দায় ওই ডাক্তারের আমাদের না। এবিষয়ে দুই ডাক্তারকে ফোন করা হলে তারা মুঠোফোনের লাইন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখেন। ভুল অপারেশনের মাধ্যমে প্রিয় সন্তানের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন শিশুটির পরিবার। এঘটনায় ক্রাউন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও দুই ডাক্তারের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও শিশুটির পরিবার।
অপরদিকে সাভারের থানা বাসস্ট্যান্ড মর্ডান প্লাজার উপরে অবস্থিত সাভার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায়য় ১৩ বছরের শিশু রাতুলের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ থেকে টনসিল অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয় রাতুলকে। পরে টনসিল ভুলভাবে অপারেশন করার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। একই দিনে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা জানায়, সাভারে যততত্র বিভিন্ন স্থানে নামমাত্র অনেক হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। চিকিৎসার নামে এসব হাসপাতালে কথিত হাসপাতাল মালিকরা রোগীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। কারণ এই জনপদে বেশীর ভাগ মানুষ গার্মেন্টস শ্রমিকসহ ভাসমান। তাই তারা দালালদের মাধ্যমে এসব হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ভুল চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। ভুল চিকিৎসা সেবা নিয়ে মৃত্যুর কাছে হার মানছেন অনেকেই। স্থানীয়রা এসব হাসপাতাল বন্ধে প্রশাসনে উপর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, দুই হাসপাতালে দুই জন মারা গেছে। শিশু দুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিত্বে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।