স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ
গাজীপুরে ‘চামড়া শিল্পে পরিবেশগত প্রভাব এবং আধিকার’ শীর্ষক এক “মৈত্রী বন্ধন সভা” অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ সভার আয়োজন করে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন ও আকন্দ ফাউন্ডেশন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী মুকিত মজুমদার বাবু।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), মো. সোহেল রানা। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল খায়ের, ব্যারিস্টার জাহিদ হাসান আকন্দ, চেয়ারম্যান, আকন্দ ফাউন্ডেশন। এ সময় সাংবাদিক, শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি ও পরিবেশ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিখাত হিসেবে চামড়া শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ২০২২-২৩ অর্থবছরের তথ্য অনুযায়ী, চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয় ৩.৮ শতাংশ এবং শিল্প আয়ে অবদান ২ শতাংশ, যা দেশের মোট জিডিপিতে ০.৬০ শতাংশ অবদান রাখছে।
তারা আরও জানান, মানসম্পন্ন চামড়া উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো বৃহৎ বাজার ধরতে পারছে না বাংলাদেশ। এর ফলে কম দামে চীনে 'ক্রাস্ট লেদার' বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের বাজার প্রায় ৬৫০ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের অংশমাত্র ১ বিলিয়ন ডলার, যা ০.৫ শতাংশেরও কম।
বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং আধুনিক ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে চামড়া শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তারা জানান, দেশে বর্তমানে চামড়া শিল্পে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে, যা চামড়ার মান উন্নয়ন ও বৈদেশিক বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে ৩৫ লাখে উন্নীত করা সম্ভব।
সভায় পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধি, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নীতি সহায়তা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বক্তারা জানান, চামড়া শিল্পের উৎপাদিত বর্জ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশ থেকে টাইলস, বন্ডেড লেদারসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে বছরে ৪০০-৫০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।
এ সময় চামড়া শিল্পে কর্মরতদের অধিকার রক্ষা, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণেরও আহ্বান জানান বক্তারা।
