ইসরাইল মিশরের সঙ্গে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার) একটি গ্যাস চুক্তি সই করেছে। স্থানীয় সময় বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক ঘোষণায় চুক্তির বিষয়টি জানান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১৪ নেতানিয়াহুর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এই গ্যাস চুক্তিকে তিনি ইসরাইলের জন্য একটি ‘অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অর্জন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। চুক্তির আওতায় ইসরাইল অধিকৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দীর্ঘ সময় ধরে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস মিশরে রপ্তানি করা হবে। গ্যাস সরবরাহের দায়িত্ব পালন করবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জ্বালানি কোম্পানি শেভরন।
এক সময় প্রাকৃতিক গ্যাসে তুলনামূলক স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল মিশর এবং কোনো কোনো সময়ে গ্যাস রপ্তানিও করত দেশটি। তবে বর্তমানে সেই মিশরই ইসরাইল থেকে বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির পথে এগোচ্ছে।
ইসরাইলি জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেনের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই চুক্তি আঞ্চলিক জ্বালানি শক্তি হিসেবে ইসরাইলের অবস্থানকে অনেক বেশি শক্তিশালী করবে ও আমাদের অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় অবদান রাখবে। একই সঙ্গে এটি ইসরাইলের অর্থনৈতিক জলসীমায় গ্যাস অনুসন্ধানে অন্যান্য কোম্পানিকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে।’
ষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ইসরাইলি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিটির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন কয়েক মাস ধরে ঝুলে ছিল। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে ইসরাইল এটি অনুমোদন দিতে বাধ্য হয়। তবে এই ঘোষণা নিয়ে এখনও মিশর সরকার আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আঞ্চলিক শান্তি উদ্যোগ এবং আব্রাহাম চুক্তির সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছেন। দেশ দুটির শীর্ষ নেতারা প্রায় এক দশক ধরে প্রকাশ্যে কোনো বৈঠকে অংশ নেননি।
আরেকটি ইসরাইলি সূত্র জানিয়েছে, মূলত নেতানিয়াহু ও সিসির সম্ভাব্য বৈঠকের পরিবেশ তৈরির অংশ হিসেবে গ্যাস চুক্তির ঘোষণাটি এলো। চলতি মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে নেতানিয়াহুর। সেখানে তিনি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স