ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিরা জানিয়েছেন, তারা যেন কোনো কারাগারে নয় বরং এক ‘কসাইখানায়’ ছিলেন।

মুক্তি পাওয়া আব্দাল্লাহ আবু রাফে বলেন, আমরা কসাইখানায় ছিলাম, কারাগারে নয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা ‘ওফার কারাগার’ নামের এক ভয়ংকর জায়গায় বন্দি ছিলাম। অনেক তরুণ এখনো সেখানে বন্দি অবস্থায় আছে।

রাফে জানান, ইসরাইলি কারাগারগুলোর অবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। সেখানে কোনো গদি ছিল না, যেটুকু ছিল তাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। খাবারের অবস্থা ছিল শোচনীয়, প্রতিটি মুহূর্ত ছিল কষ্টে ভরা।

মুক্তির অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, এ যেন জীবনের সেরা মুহূর্ত। এমন মুক্তির স্বাদ ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।

আরেক মুক্ত ফিলিস্তিনি ইয়াসিন আবু আমরা বলেন, ওফার কারাগারের পরিস্থিতি ভয়াবহ। খাবার, পানি, চিকিৎসা—কিছুই ঠিকমতো পাওয়া যেত না। নির্যাতন, মারধর, ক্ষুধা-সব মিলিয়ে এক নরকযন্ত্রণা।

তিনি আরও জানান, আমি টানা চার দিন না খেয়ে ছিলাম। মুক্তি পাওয়ার পর আমাকে দুটি মিষ্টি দেওয়া হয়েছে, সেটিই ছিল প্রথম খাবার।

আরেক বন্দি সাঈদ শুবাইর বলেন, এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। অনেক বছর পর সূর্যের আলো দেখা, বাতাসের ছোঁয়া পাওয়া, এ এক অবর্ণনীয় অনুভূতি। স্বাধীনতার কোনো দাম নেই, এটি অমূল্য।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ইসরাইল প্রায় ২৫০ জন আজীবন বা দীর্ঘ কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

এছাড়া গাজা যুদ্ধ চলাকালে আটক আরও প্রায় ১,৭১৮ জনকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ আগে তাদের ‘জোরপূর্বক গুমকৃত ব্যক্তি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল।

ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্ত ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, তারা অমানবিক পরিস্থিতিতে দিন কাটিয়েছেন। কেউ কেউ টানা চার দিন না খেয়ে ছিলেন। সোমবার প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা