১৮ মার্চ, সিএনএন : আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের ব্যাপক প্রচেষ্টায় গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন সরকার ও গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। চুক্তির শর্ত অনুসারে ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয় গাজায়।

এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা সামারিক অভিযানের ইতি টেনেছিল ইসরাইল। ভয়াবহ সেই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে যে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল হামাসের যোদ্ধারা, সেই হামলার জবাব দিতে এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের উদ্ধারে এ অভিযান শুরু করেছিল ইসরাইল।

যে চুক্তির ভিত্তিতে ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল, সেটি তিন পর্বে বিভক্ত। প্রথম স্তরে হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মি ও ইসরাইলের কারাগারগুলোতে থাকা বন্দি বিনিময়ের পাশাপাশি গাজায় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ স্বাভাবিক করার শর্ত ছিল। দ্বিতীয় স্তরের শর্ত ছিল যে অবশিষ্ট সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস এবং গাজা থেকে নিজেদের সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল।

চুক্তির প্রথম পর্বের মেয়াদ ছিল ৬ সপ্তাহ। সেই মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হয়েছে; তারপর থেকে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে সমস্যায় পড়েছে ইসরাইল ও হামাস। কারণ হামাস চাইছে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, অন্যদিকে ইসরাইলের আশঙ্কা- গাজা থেকে সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে নিজেদের সংগঠিত করে ফের ইসরাইলে হামলা চালাবে হামাস।

এর মধ্যে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের দ্বৈত নাগরিক এবং ইসরাইলি বাহিনীর সেনা সদস্য ইদান আলেক্সান্দারসহ চার জন দ্বৈত নাগরিকের মরদেহ ইসরাইলকে ফেরত দেয় হামাস। ইসরাইলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে ইদান আলেক্সান্দার ও বাকি ৩ জনকে ইচ্ছাকৃতভাবে খুন করেছে হামাস যোদ্ধারা, তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই নিয়ে দু’পক্ষের টানাপোড়েনের মধ্যেই গত সোমবার রাতে গাজায় ফের সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরাইলী বাহিনী। এ অভিযানে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ শ’ ফিলিস্তিনী। ফলে ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল, গতকাল সোমবার কার্যত তা শেষ হয়ে গেছে।