যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ)।

পেন্টাগনের গোপন বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলবে না। হামলায় দেশটির কার্যক্রম মাত্র ৬ থেকে ৯ মাস পিছিয়ে যেতে পারে।

বুধবার (২৫ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

এর আগে, গত সপ্তাহে ইরানের নাতানজ, ফোরদো ও ইসফাহান—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্র বাঙ্কার বাস্টার বোমা হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ডিআইএর প্রতিবেদন বলছে ভিন্ন কথা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাটির নিচে থাকা ইরানের গবেষণা ল্যাব এবং সেন্ট্রিফিউজ ইউনিটের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেগুলোর বেশিরভাগই আবার সচল করার মতো অবস্থায় রয়েছে। হামলার আগেই ইরান তাদের বেশিরভাগ ইউরেনিয়াম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়, ফলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (IAEA) প্রধান রাফায়েল গ্রসি জানান, বর্তমানে সংস্থাটি ৪০০ কেজি ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের কোনো হদিস পাচ্ছে না।

এই প্রতিবেদন ফাঁস হওয়ার পর হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, “এই তথাকথিত প্রতিবেদন ফাঁস করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমাদের সাহসী সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে।”

কংগ্রেসে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের ভাষ্য, “যদি এত ব্যয়বহুল সামরিক অভিযানের পর শুধু সময়ই কেনা হয়, তাহলে সেটিকে ব্যর্থ কৌশলই বলতে হয়।”

অন্যদিকে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা ভয় পাইনি। যত দ্রুত সম্ভব পারমাণবিক প্রকল্প পুনরায় চালু করা হবে।” ইরান এই হামলাকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ বলেও অভিহিত করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা কৌশলগত না হয়ে বরং কূটনৈতিক চাপে রাখার কৌশল। ইরান চাইলে কয়েক মাসের মধ্যেই আগের সক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে মত দিয়েছেন তারা।