পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে চরম অবনতি ঘটেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) টানা ১১ রাত গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। এমন অবস্থায় কাশ্মীর সীমান্ত থেকে প্রতিদিনই আসছে দুদেশের সেনাদের সংঘাতের খবর।
রোববার (৪ মে) রাতেও কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে। এ নিয়ে এলওসিতে টানা ১১ রাত সংঘাতে জড়ালেন দুদেশের সেনারা।
সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় গণমাধ্যমে গোলাগুলির বিষয়ে বরাবরের মতো পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হলেও গতকাল রাতের ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বা দেশটির সংবাদমাধ্যমে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর টানা ১১ রাত ধরে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সেবাবাহিনী।
সবশেষ ৪ ও ৫ মে এর মধ্যবর্তী রাতে কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবনি ও আখনুর সেক্টরে ভারতীয় সেনাদের চেকপোস্ট লক্ষ্য করে হামলা করে পাকিস্তানি সেনারা। ভারতীয় সেনারাও গুলির মাধ্যমেই পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে, হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি এ গোলাগুলিতে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। সীমান্তে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় নিজের তিন বাহিনীকে অভিযানের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তানের দিক থেকেও চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান।
এরইমধ্যে বেশ কয়েক দফায় কাশ্মীরের সীমান্ত রেখায় (এলওসি) গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে মহড়া তো চলছেই, ইসলামাবাদকে সতর্কবার্তা দিতে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গতকাল শনিবার পাকিস্তানও ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র ‘সিন্ধু মহড়ার’ অংশ হিসেবে পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।