ইরানে মার্কিন হামলার জেরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডানপন্থি রাজনৈতিক জোটে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একটি বড় অংশ এ পদক্ষেপে প্রকাশ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। অনেকে এই হামলাকে সমর্থন করলেও অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র এক নতুন ও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে—যা শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এমনটাই উঠে এসেছে আলজাজিরা–র প্রতিবেদনে।

গত ১৩ জুন ইসরায়েলের সরাসরি হামলার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ওপর বোমাবর্ষণ শুরু করে। এ ঘটনার পর থেকেই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্রদের একটি অংশ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

তাদের মতে, ট্রাম্পের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল "বিদেশি যুদ্ধে না জড়ানো", অথচ ইরান ইস্যুতে তার পদক্ষেপ সেই প্রতিশ্রুতির বিরোধিতা করছে।

স্মরণযোগ্য যে, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে ট্রাম্পের প্রশাসন আগ্রাসী ভূমিকা নেয়। এর মধ্যে ২০২০ সালে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ ছিল অন্যতম বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। সে সময় তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন।

দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভ ম্যাগাজিনের পরিচালক কার্ট মিলস আলজাজিরাকে বলেন, “২০২৫ সালের জুন মাস যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কের জন্য একটি মোড় ঘোরানো সময় হয়ে থাকবে—বিশেষ করে ডানপন্থি রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে। সেই ‘বিশেষ সম্পর্ক’ এখন অনেকটাই ফিকে।”

তিনি আরও জানান, টাকার কার্লসন, স্টিভ ব্যানন, ম্যাট গেটজ, মারজোরি টেলর গ্রিন এবং জশ হোলির মতো প্রভাবশালী ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (MAGA) নেতারা এই যুদ্ধের বিপক্ষে স্পষ্টভাবে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আমেরিকার স্বার্থের সঙ্গে যায় না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেরই রাজনৈতিক আন্দোলনের অভ্যন্তরে এমন ভাঙন নির্বাচনী বছরে ট্রাম্পের প্রচার কৌশল ও জনসমর্থনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই বিভক্তি সামাল দিয়ে তিনি কীভাবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারেন।