ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সম্পূর্ণ গাজা উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।

শুক্রবার ( ৮ আগস্ট) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানা যায়।

গাজায় প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এই অভিযান শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) গাজা দখল অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করবে। এটি গাজা পূর্ণ দখল অভিযানের প্রথম ধাপ হিসেবে ধরা হচ্ছে, যা কয়েকমাস পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিএননের খবর অনুযায়ী, আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে বাসিন্দাদের গাজা ছেড়ে চলে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য উপত্যকায় ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

গাজার ভবিষ্যৎ কী?

এর আগে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।

তবে দীর্ঘমেয়াদে দখলে রাখার পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা গাজাকে নিজেদের দখলে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় চাই।’

নেতানিয়াহু জানান, তিনি গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান, যারা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হবে না। গাজাবাসীকে এই ব্যবস্থা ভালো জীবন দেবে বলে মনে করেন তিনি।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, হামাসকে সরানো এবং গাজার মানুষকে মুক্ত করে সমগ্র উপত্যকাকে বেসামরিক শাসনের আওতায় আনতেই আমরা গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে ইচ্ছুক।’

গাজা দখলের পরিকল্পনায় জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের তীব্র সমালোচনা

এদিকে, জাতিসংঘ ও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানরা ইসরায়েলের নতুন এই পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।

ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের এই সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের গাজায় গণহত্যা ঠেকানোর আদেশের অবমাননা হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই পরিকল্পনাকে ‘মারাত্মক ভুল’ আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলকে ‘তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার’ আহ্বান জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের এমন পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, স্পেন ও নেদারল্যান্ডস।

সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা