মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলা।
বৃহস্পতিবার রাতে থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে এ ভয়াবহ সংঘর্ষ চলে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা একযোগে ইরানের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
IDF সূত্রে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী ৬০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে তেহরানসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১২০টি যুদ্ধাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। মূলত, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত কেন্দ্রগুলোই ছিল তাদের প্রধান লক্ষ্য।
অন্যদিকে, শুক্রবার ভোরে ইরান দক্ষিণ ইসরায়েলের শহর বিরসেবা, তেল আবিব, হোলোন ও রামাত গানে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে একটি মাইক্রোসফট ভবনের কাছে বিস্ফোরণ ঘটে, কিছু আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পাঁচজন আহত হন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। ইসরায়েলি জরুরি দল ‘মেগান ডেভিড অ্যাডম’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছে।
বিরসেবা শহরের কাছে অবস্থিত সোরোকা হাসপাতালেও একটি বড় ধরনের হামলা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার সময় হাসপাতালজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, জানালার কাচ ভেঙে পড়ে, মানুষ চিৎকার করে পালাতে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিস্ফোরণে বেশ কয়েকটি বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি ‘বিপজ্জনক পদার্থের লিক’ হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়া রামাত গানে হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন এবং হোলোন শহরে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি ছিল তাদের ১৪তম সমন্বিত হামলা—তবে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
ইসরায়েলি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চলে সাময়িকভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে। আইডিএফ জানিয়েছে, ইরানের হামলা ছিল "বড় ধরনের ও কৌশলগত স্থাপনায় লক্ষ্য করে চালানো"। জেরুজালেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে বলে বিবিসি সংবাদদাতারা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন ধরেই চলমান উত্তেজনার পর এই পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।