মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গাজা উপত্যকায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষ শেষ করার লক্ষ্যে হামাস অবশেষে ইসরাইলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় সমঝোতা বা চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে।

হামাস শুক্রবার ভোররাতে জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং জরুরি সহায়তা প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, চুক্তিতে গাজায় থাকা ইসরাইলি বন্দিদের ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়কেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সংগঠনটি আরও বলেছে, চুক্তি প্রস্তাবের আগে বিভিন্ন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর সঙ্গে “দায়িত্বপূর্ণ ও গুরুত্বসহকারে” আলোচনা হয়েছে।

আলোচনার সময় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ইব্রাহিম হামেদের নাম, যিনি পশ্চিম তীরের হামাসের একজন শীর্ষ কমান্ডার। ইসরাইলি নিরাপত্তা সংস্থা শাবাক তাঁকে ‘দ্বিতীয় ইয়াহিয়া সিনওয়ার’ হিসেবে বিবেচনা করে। ৫৪ বছরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত এই হামেদ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে রয়েছেন।

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, মিশরের শারম আল-শেখে আলোচনার সময় হামাস প্রাক্তন কমান্ডার ইব্রাহিম হামেদের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল। তবে অন্যান্য বিশিষ্ট ফিলিস্তিনি নেতাদের মুক্তিতে ইসরাইলের মতামত এখনো স্পষ্ট নয়।

হামাস জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার ৭২ ঘণ্টা পর তারা ২০ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দি মুক্তি দেবে। ইসরাইলও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে ২,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছাড়তে, যার মধ্যে ২৫০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রয়েছে এবং ১,৭০০ জন গত দুই বছর ধরে আটক রয়েছেন।

ইব্রাহিম হামেদ ১৯৬৫ সালে পশ্চিম তীরের সিলওয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯০ সাল থেকে হামাসের সামরিক শাখায় সক্রিয়, এবং ২০০৬ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে কঠোর কারাগারে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে কারাগারে তাকে নানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।

হামাসের এই ঘোষণার মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘর্ষ কমানোর দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ নেওয়া হলো।