আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন গতি এসেছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনি আগামী ২৩ আগস্ট বাংলাদেশে পৌঁছাবেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ঠান্ডা ছিল।
বিশেষত, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে থেকেছে এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রেখেছে।
তবে গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক উষ্ণ হয়ে উঠেছে। পারস্পরিক বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।
ইসহাক দার এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকা সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে সফর স্থগিত হয়। নতুন সূচি অনুযায়ী তিনি ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসবেন। দ্য ডন–এর সঙ্গে আলাপে এ সফরের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া আরও কয়েকটি কর্মসূচি তার সফরসূচিতে রয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত মাসে দুই দেশ কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশে নীতিগতভাবে একমত হয়। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মধ্যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
গত মার্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফোনে কথা বলে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ বিরতির পর সরকার-থেকে-সরকার সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়, যার অংশ হিসেবে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়।
এছাড়া ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে করাচি থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি প্রথমবারের মতো একটি কনটেইনার জাহাজ আসে, যা কয়েক দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের নতুন মাইলফলক।