রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ জটিল রূপ নেওয়ায় ইউক্রেনকে সাময়িকভাবে অস্ত্র সহায়তা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিজেদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে। সাম্প্রতিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনার ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আনা কেলি আরও বলেন, “বিভিন্ন দেশে সামরিক সহায়তা ও অংশীদারত্বের ভারসাম্য মূল্যায়ন করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেনকে কয়েক হাজার কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা মার্কিন অস্ত্রভান্ডারের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষ করে এয়ার ডিফেন্স মিসাইল ও লক্ষ্যভেদে সক্ষম গোলাবারুদের চালান স্থগিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন প্রতিরক্ষা নীতির উপমন্ত্রী এলব্রিজ কোলবি বলেছেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের হাতে এখনও সহায়তার কিছু বিকল্প আছে, তবে সামরিক প্রস্তুতির ভারসাম্য রক্ষা করাও এখন গুরুত্বপূর্ণ।”
সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক মজুত ‘বিপজ্জনক’ভাবে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কাই এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ।
এদিকে, আনা কেলি মন্তব্য করেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি নিয়ে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়। ইরানের ওপর সাম্প্রতিক হামলাই তার প্রমাণ।”
গত সপ্তাহে ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠক শেষে ট্রাম্প জানান, “আমরা কিছু প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করছি।”
এর আগে মার্চে উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডার পর সাময়িকভাবে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ হয়েছিল, যা পরে আবার চালু হয়। তবে এপ্রিলের এক চুক্তিতে খনিজ সম্পদের ওপর মার্কিন প্রবেশাধিকার দেওয়ার শর্তে আবার সহায়তা পেয়েছিল ইউক্রেন।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার ইউক্রেন রাশিয়ার ইজহেভস্ক শহরের একটি অস্ত্র কারখানায় হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়। শহরটি সীমান্ত থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে এবং রাশিয়ার সামরিক উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্র।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্রিমিয়াও।