যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সে লক্ষ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি ‘হটলাইন’ বার্তা পাকিস্তানি সেনার উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, ভারতের সঙ্গে সংঘাতে নিজেদের কৃতিত্বের কথা জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আইএসপিআরের মহাপরিচালক আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতের অভ্যন্তরে ২৬টি সামরিক ঘাঁটিতে জবাবি হামলা চালানো হয়েছে। লক্ষ্য নির্ধারণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয় যাতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয়। শুধু হামলায় জড়িত সামরিক স্থাপনাগুলোকেই টার্গেট করা হয়।

পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেছে- ভারতের এমন দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে আইএসপিআর মহাপরিচালক জানান, পাকিস্তান কখনো যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেনি। এই দাবি ভিত্তিহীন এবং এটি শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত গুজব। বরং যুদ্ধবিরতির অনুরোধ এসেছে ভারতের পক্ষ থেকে। তাদের পক্ষ থেকেই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল যুদ্ধবিরতির জন্য।

রবিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। আহমেদ শরীফ আরও জানান, পাকিস্তানের সশস্ত্র ড্রোনগুলো নয়াদিল্লিসহ ভারতের বড় বড় শহরের আকাশে নজরদারি চালিয়েছে। এই পুরো অভিযানে পাকিস্তানের তিন বাহিনী- সেনা, নৌ ও বিমান একসঙ্গে কাজ করেছে, যা ছিল একটি ‘পাঠ্যপুস্তকীয় যৌথ সামরিক প্রদর্শনী’।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের হাতে কোনো ভারতীয় পাইলট আটক নেই, এটি সম্পূর্ণ ভুয়া তথ্য। এ সময় তিনি পাকিস্তানি তরুণদের ‘তথ্য ও সাইবার যোদ্ধা’ হিসেবে ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, দেশের জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী। ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে চালানো ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’-এর মাধ্যমে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে পাকিস্তান।

আইএসপিআর মহাপরিচালক আরও জানান, পাকিস্তান ২৬টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা ছাড়ও দুটি স্থানে ভারতীয় এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে এবং পাকিস্তান ৮৪টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সূত্র : জিও নিউজ ও ডন।

এদিকে, টানা ১৮ দিন পাল্টাপাল্টি গোলাগুলির পর অবশেষে শান্ত রাত পার করলো ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা এলওসি’র বাসিন্দারা। সোমবার (১১ মে) দিবাগত রাতে সীমান্ত এলাকায় সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, জম্মু-কাশ্মিরের সব জায়গাই ছিল শান্ত। বেশিরভাগ এলাকা থেকেই তুলে নেয়া হয়েছে ব্ল্যাকআউটের নির্দেশনা। এ সময় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগও ওঠেনি। যদিও লাইন কব কন্ট্রোলে সতর্ক অবস্থায় ছিল দু’দেশের সেনারাই।

এর আগে, গত শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় সব ধরনের অভিযান বন্ধ রাখতে সম্মত হয় ভারত ও পাকিস্তান। যদিও যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তোলে।