সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশটির সেনাবাহিনীতে থাকা বিপুল সংখ্যক বিদেশি যোদ্ধাকে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) সিরীয় সামরিক সূত্রের বরাতে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ইরেম নিউজ’।
সামরিক সূত্র জানায়, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারের ওপর থাকা অভ্যন্তরীণ চাপ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা কিছুটা হালকা করা।
সূত্র মতে, সিরিয়ায় বর্তমানে ১০ থেকে ১২ হাজারের মতো বিদেশি যোদ্ধা সক্রিয় রয়েছে, যা পুরো সেনা শক্তির প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে এই বিদেশি যোদ্ধাদের উপস্থিতি একটি বড় বাধা। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সংলাপও এই কারণে থমকে আছে।
সিরিয়ার নতুন প্রশাসন অতীতে কিছু বিদেশি যোদ্ধাকে বৈধ করার চেষ্টা চালালেও, আন্তর্জাতিক মহলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। এমনকি দেশটি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলেও এই যোদ্ধা ইস্যু সেখানেও বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দেশটির অভ্যন্তরেও বিদেশি যোদ্ধাদের কার্যকলাপ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা সরকারি নির্দেশনার বাইরে কাজ করছে, তারা রাজধানী দামেস্ক ও উপকূলীয় শহরগুলোতে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল ও অবৈধ অভিযান চালাচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও এই পরিকল্পনার বিষয়ে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। পাশাপাশি আফ্রিকার কোন কোন দেশ এই যোদ্ধাদের গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে, কিংবা পুরো পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কেমন হবে—তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়া চাইছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে। তবে বিদেশি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ভবিষ্যৎ না নির্ধারণ করা পর্যন্ত এই লক্ষ্য অর্জন কঠিনই হবে।