ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দখলদার ইসরাইলের লাগাতার হামলায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষের জীবন শেষ হয়ে গেছে—যার বেশ বড় একটি অংশ নারী ও শিশু। এই সহিংসতায় অসংখ্য শিশু হারিয়েছে তাদের বাবা-মাকে, আবার অনেক বাবা-মা হারিয়েছে আদরের সন্তানকে।

গাজার অনেক ছোট্ট শিশু এত অল্প বয়সেই এতিম হয়ে গেছে যে, তারা এখনো বুঝতেই পারে না তাদের জীবন থেকে কত বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।

আলজাজিরা সোমবার (২৪ নভেম্বর) একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যায়—গাজার বেশ কিছু শিশুর সঙ্গে কথা বলছেন এক ব্যক্তি। তিনি জানতে চান, তাদের বাবা-মা কেউ মারা গেছেন কি না।

এক ছেলে শিশুকে বলতে শোনা যায়, “আমার বাবা-মা দুজনই মারা গেছে।”

পাশে থাকা এক মেয়ে শিশুকে দেখিয়ে সে বলে, “তার বাবাও মারা গেছে।”

লোকটি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন, “সত্যি? তোমার বাবা মারা গেছে? আর ওর বাবাও?”

তখন পাশের আরেক শিশুটি জানায়, “না, ওর মা মারা গেছে।” মেয়েটি জানায়, তার বাবা নাবলুসে মারা গেছেন। ছেলেটি বলে, তার বাবা মারা গেছেন মেরাজ এলাকায়। কীভাবে মারা গেলেন জানতে চাইলে সে জানায়, “আমার বাবা আমাদের খাবারের জন্য আটার বস্তা আনতে গিয়েছিলেন।”

লোকটি পরে জিজ্ঞেস করেন, “তারপর তিনি শহীদ হয়ে ফিরে এসেছেন?” শিশুটি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলে। আবার জিজ্ঞেস করা হয়, “তোমার কি বাবার জন্য দুঃখ লাগে?” সে নীরবে মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।

মেয়েটি তখন বলে, আমার বাবাকে ইসরাইলি সেনারা তিনটি গুলি করেছে। ছেলেটি তার হার্টের দিকে ইশারা করে দেখায়, আমার বাবাকে এখানে গুলি করেছে।

প্রশ্নকারী তখন জিজ্ঞেস করেন তুমি কোন পরিবারের সন্তান। শিশুটি বলে ‘ওদা’। তোমরা কি এখন জেইতুনে থাকো এ প্রশ্নের জবাবে শিশুটি বলে ‘হ্যাঁ’।

এরপর মেয়ে শিশুটিকে তার বাবার নাম জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার বাবার নাম ছিল ফাদি। কীভাবে মারা গেছে প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, নাবলুসে, লাকড়ি কুড়াতে গিয়েছিলেন। যেন সেগুলো বিক্রি করে আমাদের জন্য আটা কিনে আনতে পারে। কিন্তু তিনি মৃত অবস্থায় ফিরে এসেছিলেন।

সূত্র: আলজাজিরার